পবিত্র মাহে রমজানের অর্ধেক অতিক্রম হয়ে দ্বিতীয় দশকের সমাপ্তি লগ্ন উপস্থিত। মাগফিরাতের বিদায় বেলা সকল রোজাদারের মনে একটিই প্রশ্ন এখনো মহান আল্লাহ আমাকে মাফ করেছেন কিনা! এরপর আসছে নাজাতের দশক। জাহান্নাম হতে মুক্তির বরকতপূর্ণ সময়।
শেষ দশকের অনন্য সব বৈশিষ্টের অন্যতম একটি হল লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদর। এ রাত এতোটাই পূর্ণবান যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এই রাতের নামে একটি স্বতন্ত্র সুরার নামকরণ করেছেন। এবং এই রাতের তাৎপর্য বর্ণনায় এরশাদ করেছেন যে, এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা উত্তম।
উক্ত সুরায় আরো আছে যে, এ রাতে হজরত জীবরাইল আ. সহ ফেরেশতাদের এক জামাত অবতীর্ণ হয় এবং ফজর পর্যন্ত তারা ইবাদাতরত ব্যক্তিদের সাথে সালাম বিনিময় করেন।
এছাড়া এই রাতে কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টিও উক্ত সুরার উল্লেখ যোগ্য অধ্যায়। এবং অপর একটি সুরায় মহান আল্লাহ তায়ালা এই রাতকে “লাইলাতুন মুবারাকাতুন” বলেও উল্লেখ করেছেন। (সুরা দুখান-২)
তবে বহুল ফজিলতপূর্ণ এই রাতটি ঠিক রমজানের কোন রজনীতে তার কোন নির্দিষ্ট তারিখ কুরআন সুন্নাহে উল্লেখ নেই। সহীহ হাদিসের আলোকে কেবল এতোটুকু জানা যায় যে তা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রীগুলির কোন এক রজনীতে হয়ে থাকবে।
আম্মাজান হজরত আয়শা (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান কর। (মুসলিম ১৩/৪০, হাঃ ১১৬৯, আহমাদ ২৪৩৪৬)
সুতরাং লাইলাতুল কদরের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তারিখের বর্ণনা কুরআন সুন্নাহে না থাকায় ২৭ রমজান বা অন্যকোন তারিখের সাথে তা সম্পর্কযুক্ত করা ঠিক নয়। হ্যাঁ, ২৭ রমজানেও হতে পারে অথবা শেষ দশকের যে কোন বেজোড় রাত্রীতেও হতে পারে। সুতরাং ২৭ রমজানকে শবে কদর বলে প্রচার করা বা এ রাতেই শবে কদর মনে করে বিশেষ ইহতিমাম করা অনুচিত।
(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )
খুলনা গেজেট/এমএম