আজ ১৭ই রমজান। আরো শুক্রবার। ঠিক এমনই একটি দিনে ইসলামের এক গৌরবউজ্জল ইতিহাস রচনা হয়। সত্যের জয় এবং মিথ্যার পরাজয় সুনিশ্চিত হয়। একত্ববাদের ঝান্ডা হয় উথিত আর শিরকের পতাকা হয়েছিল পতিত।
আল্লাহর দ্বীন পৃথিবীতে সমুন্নত করার লক্ষে তিনশত তের জনের নিরস্ত্র ও জানবাজ কাফেলা বদর প্রান্তরে একত্র হয়। মুখোমুখি অবস্থান গ্রহন করে একহাজার স্বসস্ত্র বাহিনীর। আসমান-জমিন আর চাদ সুরুজ এ সত্বের নিরব সাক্ষি হয়ে চিরকাল থাকবে যে, হক্বের সামনে বাতিল কত অসহায়। সেদিন মহান আল্লাহ এই ক্ষুদ্র নিরস্ত্র দলের কাছে মুশরিক বাহিনীকে এমনভাবে পরাজিত করেছিলেন যে তারা কোন মতে জান নিয়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়ে ছিল।
বদর যুদ্ধের পটভুমি, প্রেক্ষাপট ও যুদ্ধরত পরিস্থিতি এবং সর্বশেষ ফলাফল সংত্রান্ত আলোচানা বহুল আলোচিত। তবে এই প্রবন্ধে আমরা কেবল বদর যুদ্ধে মুসলমানদের এই অভূতপূর্ব জয়ের মুল রহস্যের বিষয়টি আলোচনা করবো।
উভয় পক্ষের সৈন্য সংখ্যার প্রতি যদি দৃষ্টি দেওয়া হয় দেখা যাবে তাতে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। অথচ মুসলমানগন যুদ্ধের শুরু থেকেই এতাটা আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছেন যা অকল্পনীয়। এর কারন ছিলো মহান আল্লাহ তাদেরকে রাতেই অবগত করেছিলেন যে, “যদি তোমরা সবর এবং তাকওয়ার পরিচয় দাও তবে আমি তোমাদের সাহায্যর্থে পাঁচ হাজার ফেরেশতার এক বাহিনী প্রেরণ করবে” (আল ইমরান-১২৫)
আলোচ্য আয়াত থেকে অবগত হওয়া যায় মূলতো মুসলমানদের শক্তির উৎস ছিল এই দুই জিনিস। সবর এবং তাকওয়া। প্রকৃতার্থে এটাই মানুষের আসল সম্বল। যার দ্বারা সাহাবীগন এই প্রতিকুল অবস্থায়ও আল্লাহর সাহায্য নিজেদের করে নিতে পেরেছিলেন। ইমান ও কুফুরের প্রথম সংঘাতেই ইসলামের বিজয় ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আরো আশ্চর্যের বিষয় হলো রমজানের বিশেষ উল্লেখযোগ্য দুটি তাৎপর্য এবং বদরের এই হাতিয়ারের সাথে হুবহু মিলে যায়। সবর আর তাকওয়া যা বদরের বিজয়ের মুল শক্তি ছিলো আসলে এদুটো রমজানের ও মুল লক্ষ। মহান আল্লাহ বলেন, আমি তোমাদের উপর রোজা ফরজ করেছি যেমন তোমাদের পূর্ববর্তিদের উপর করেছিলাম যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (সুরা বাকারা-১৮৩) আর অপর দিকে নবীজি সা. হাদিসে এরশাদ করেন, রমজান হলো সবরের মাস। (বাইহাক্বী- ৫/২২৪)
(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )
খুলনা গেজেট/এমএম