খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

চিত্রা নদী ও হক ক্যানেল ময়লার ভাগাড়

এস এস সাগর, চিতলমারী

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের দুই পাড়ে কয়েকশ’ পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন রয়েছে। সেই সাথে কিছু নোংরা মানুষের খামখেয়ালীতে এটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কুরমনির সদ্য খননকৃত পাটনীবাড়ি খালের পানি প্রবাহ। তাই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পানি। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় এ উপজেলার তিনটি নদী ও ৫৫ টি খালের খনন কাজ কাজ শেষ পর্যায়ে পৌঁছালেও পয়ঃবর্জ্য, নর্দমার ড্রেন অপসারণ এবং নদী ও খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ের এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাচ্ছে বলে পরিবেশবিদরা মনে করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ২০১৯ সালের শেষের দিকে ৩ টি নদীসহ ৫৫ খালের খনন কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। বেশিরভাগ খাল ও নদী খনন হলেও বর্তমানে চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের খনন কাজ শেষের দিকে। কিন্তু শুধু উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের দুই পাড়ে কয়েকশ’ পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন রয়েছে।

এছাড়া কিছু নোংরা মানুষের খামখেয়ালীতে এটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কুরমনির সদ্য খননকৃত পাটনীবাড়ি খালের পানি প্রবাহ। যা ভয়াবহ ভাবে পরিবেশকে দূষণ করছে। খাল খননের সাথে সাথে ওই সমস্ত পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় নদীর ও ক্যানেলের দু’পাড়ের বাসিন্দারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

চিত্রা পাড়ের বাসিন্দা সমির মন্ডল, মিঠু বিশ্বাস, বলরাম বিশ্বাস, গৌরাঙ্গ বিশ্বাস, রুপালী বেগম, গাউছ গাজিসহ অসংখ্য মানুষ জানান, খাল খননের শুরুতে তারা প্রাণের স্পন্দন দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ এই পানি আর ব্যববহার যোগ্য থাকছে না। এছাড়া অনেকে তাদের যাবতীয় ময়লা আবর্জনা এ খালে ফেলছে। তাদেরও কেউ বাধা দিচ্ছে না।

স্কুল শিক্ষক মোঃ সাফায়েত হোসেন ও সাংবাদিক টিটব বিশ্বাস জানান, এ গুলো অপসারণ ও বন্ধে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এ উপজেলার মানুষের সীমাহীন পানির কষ্ট রয়েছে। তাছাড়া যারা পরিবেশ দূষণ করছে তারা অপরাধ করছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) খুলনা বিভাগীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদাসিনতার কারনে এ ধরনের পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চলছে। যার কারণে পরিবেশ প্রতিবেশ চরম হুমকির মুখে। অবিলম্বে এসকল কর্মকান্ড বন্ধের জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাচ্ছে। তা রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিটন আলী সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি সর্ম্পকে আমরা অবগত আছি। এ ঘটনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যারা এ ধরণের কাজের সাথে জড়িত তাদের নদী ও খাল দূষণ না করার জন্য অনুরোধ করব, বুঝাব। না শুনলে আমরা পরিবেশ দূষণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করব।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, নদী ও খাল খননের দায়িত্ব আমাদের। এটি রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। তারপরও আমরা বিষয়টি’র খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!