রোজার অসংখ্য তাৎপর্যের মাঝে অন্যতম একটি হলো রোজা রোজাদারকে সহানুভূতি শিক্ষা দেয়। না খাওয়ার কষ্ট কিছুটা হলেও অনুধাবন করা সম্ভব হয়। গরিবেরতো ক্ষুদা-যাতনার কষ্ট সহ্য করার তিক্ত অভিজ্ঞতা থাকেই। ধনীরাও সামর্থ থাকা সত্তেও নিজেদেরকে সেই তালিকায় শামীল করে। এতে তাদের কষ্টের অনুভূতি কিছুটা হলেও আস্মাদন করা যায়।
মানুষের সুখে সুখী হওয়া এবং তাদের দুঃখে দুখী হওয়া একটি বিরাট গুন। প্রিয় নবীজি সা. সুখে দুখে সাহাবীদের সাথী ছিলেন। উপরুন্ত ধনী-গরীবের বিভাজনে তার উক্তি ছিলো, তোমরা কিয়ামতের দিন আমাকে দরিদ্রদের মাঝে তালাশ করো। এবং তিনি মহান আল্লাহর কাছে দোয়াও করতেন “হে আল্লাহ আমাকে মিসকিন বানিয়ে দুনিয়াতে রাখুন, মিসকিন অবস্থায় যেন আমার মৃত্যু হয় আর আমি হাশরের দিনে যেন মিসকিন হয়ে আপনার দরবারে দাড়াতে পারি।
কোন এক যুদ্ধে তিনিও সাহাবীদের সাথে ক্ষুদার্তবস্থায় অবস্থান করছিলেন। সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুম তার কাছে ক্ষুদা-পিপাসার অভিযোগ করলো। কাপড় তুলে দেখাতে লাগলো ক্ষুদার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেকে পেটে পাথর বেধে আছে। সবার অভিযোগ অনুযোগ শেষ হলে নবীজি সা. তার নিজের কাপড় সরালেন। দেখা গেল, তার পেটে দুটি পাথর বাধা।
দিন শেষে ইফতারের সময় কেউ যদি একটু ঠান্ডা পানি পান করায় এতে যেমন সারা শরিরে নতুন জীবন ফিরে আসে। আর হৃয়য়ের গভীর থেকে আসে শুকরিয়ার জোয়ার। যে পানি পান করিয়েছে তার জন্য মনের অজান্তে হাজারো দোয়া রহমানের দুয়ারে ভিড় করতে থাকে। তদ্রুপ গরিবের চরম ক্ষুদার মূহুর্তে এক লুকমা খাবার অথবা তিব্র পিপাসায় এক চুমুক পানি তার দেহে নতুন প্রানের সঞ্চার ঘটায়।
বস্তুত রমজান আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে, ক্ষুদায় ধনীর যেমন কষ্ট হয় গরীবেরও তার অনুরুপ হয়। সুতরাং কোন ক্ষুদার্ত ব্যক্তির আহাজারী যেন সে সহজেই অনুধাবন করতে পারে রোজা তারই একটি বাস্তব শিক্ষা। এজন্যই প্রিয় নবীজি সা. বলেন- রমজান সহনুভূতির মাস। (বাইহাক্বী- ৫/২২৪)
(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )
খুলনা গেজেট/এমএম