গোপালগঞ্জে ব্যাপকহারে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত রোগী। গত এক সপ্তাহে দুই শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। ফলে বেড না দিতে পারায় বাধ্য হয়ে এসব রোগীদেরকে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের না দিতে পারছে স্যালাইন, আর না পারছে সিট দিতে। হাসপাতালে স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রতি বছর গরম পড়লেই গোপালগঞ্জের সর্বত্র ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এ হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৫ টি বেড থাকলেও প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী হাসপাতালে আসছেন ভর্তি হতে। গত সপ্তাহে দুই শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চাপ এতই বেড়ে গেছে যে, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জায়গা দিতে পারছে না। আর যে কারণে ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দায় ও রুমের মধ্যে মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে রোগীদের।সেখানেও গাদাগাদি করে থাকায় সামাজিক দূরত্বও মানা হচ্ছে না।
ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর স্বজন সোহানা বেগম জানান, আমি ডায়রিয়া রোগী নিযে হাসপাতালে এসেছি। এখানে কোন সিট নেই। অনেক রোগী এখানে। এক সিটে দুইজন করে আছে। এছাড়া পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য মাত্র একটি বাথরুম রয়েছে।
ডায়রিয়া রোগীর আরেক স্বজন জানান, আমার ছেলেকে নিয়ে আমি গোপালগঞ্জ হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু সিট কম থাকায় ওয়ার্ডের মেঝেতে ও বারান্দায় বেড দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, হাসপাতাল থেকে স্যালাইন ও সামান্য কিছু ওষুধ দেয়া হলেও ইনজেকশনসহ অন্যান্য ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের নার্স শ্যামলী হাজরা বলেন, আমাদের এখানে রোগীর চাপ বেশী। গত ১০ দিন ধরে রোগীর চাপ বেড়েছে। বেড সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। তবে আমরা আমাদের সাধ্য মত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ অসিত কুমার মল্লিক জানান, এ সময় হঠাৎ করে প্রচন্ড গরম আর সেই সাথে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবেই ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা রোগীদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছি। ডায়রিয়া রোগীদের জন্য মুখে খাওয়া স্যালাইন রয়েছে পর্যাপ্ত তবে কলেরা স্যালাইনের সরবরাহ একটু কম থাকায় পর্যাপ্ত দিতে পারছি না।
তিনি আরো জানান, ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি একটু জরাজীর্ণ। তাই বেড স্বল্পতা থাকায় সবাইকে বেড দিতে পারছি না। তবে ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি সংস্কার করা হলে রোগীদের থাকার সমস্যা হবে না।
খুলনা গেজেট/এনএম