স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে দুই সন্তানসহ রেকসোনা নামের এক গৃহবধূ বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে প্রথমে দুই সন্তানকে নিজ ঘরে খাবারের সাথে বিষ (কীটনাশক) মিশিয়ে খাইয়ে, পরে নিজে বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মা-মেয়ে সুস্থ থাকলেও ছোট ৭ বছরের শিশু সন্তানের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয় চিকিৎসক।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ জানায়, মোংলা পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ড হাজীপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের সাথে প্রায় ২০ বছর পূর্বে বিয়ে হয় তার। তাদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য প্রায়ই মারধর করতো স্বামী লুৎফর রহমান। এ ব্যাপারে থানায় বহুবার অভিযোগ দিলেও স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। কিছু দিন পূর্বে তার অমতে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করার ফলে প্রতিবাদ করলে ১৭ এপ্রিল শনিবার বিকেলে স্বামী লুৎফর রহমান বেধড়ক মারধর করে। এসময় স্বামীর মারধরে রক্তাক্ত জখম হন তিনি। স্বামীর এমন অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে শনিবার গভীর রাতে ছোট দুই সন্তান মেয়ে আমেনা আক্তার (১১) ও ছেলে মোঃ আবু বকর (৭) সহ বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
এলাকাবাসী জানায়, ঘরে কারো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা খুলে খাটের উপর ওই গৃহবধূসহ দুই সন্তানকে অচেতন অবস্থা পড়ে থাকতে দেখে তাদেরকে দ্রুত মোংলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্বাস্থ কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মালিহা তাবাচ্ছুম জানান, মা-মেয়ে কিছুটা সুস্থ থাকলেও শিশু পুত্র আবু বকর শঙ্কা মুক্ত নয়।
খবর পাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে মোংলা থানা পুলিশের একটি দল। তবে পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে হাসপাতাল থেকে দ্রুত সটকে পড়ে স্বামী লুৎফর রহমান। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর স্বজনেরা।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানায়, পৌর শহরের গৃহবধূ নির্যাতন ও শিশু সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া না গেলেও ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই