আম্ফান নামক প্রাকৃতিক দূর্যোগ সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে প্রতাপনগরবাসীর। প্রতাপনগর সাতক্ষীরা পূর্ব সীমানার একটি ইউনিয়ন। প্রতিবছর নয় ফাল্গুনে স্থানীয় এবিএস সিনিয়র মাদ্রাসার উদ্যোগে ঈসালে সওয়াব মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বসত ভিটার ওপর হাটু পানি থাকায় নির্দিষ্টদিনে মাহফিল হয়নি। গেল মাসে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। সর্বস্ব হারানো সাড়ে আট হাজার পরিবারের কান্না এখনও থামেনি।
গেল বছরে ২০ মে আম্ফানে কপোতাক্ষ নদ সংলগ্ন কুড়িকাহুনিয়া, সুভদ্রাকাটি, চাকলা, হরিষখালি, খোলপেটুয়া নদী সংলগ্ন হিজলিয়া এবং কোলার বাধ ভেঙ্গে ষোলটি গ্রাম প্লাবিত হয়। বাঁধ ভাংগার পর গৃহহীন মানুষ পৈত্রিক ভিটে ছেড়ে মদিনাবাদ, নওয়াবেকি, আশাশুনি, সাতক্ষীরা ও খুলনা শহরে এসে আশ্রয় নিয়েছে। হারিয়েছে চিংড়ির ঘের। নোনা পানিতে ধ্বসে পড়েছে বসত ঘর। গভীর নলকুপে নোনা পানি ঢুকে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব সৃষ্টি করেছে। কোনো পরিবারের পায়খানার অস্তিত্ব নেই। বাধ ভাঙ্গা জোয়ারের পানিতে কাঁকড়া ও মাছ ধরে চাল কেনার টাকা জোগাড় হয়েছে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। এখন এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। সরকারি ত্রাণ সামগ্রীও নেই। ইট ভাটা ও দুবলার শুটকি পল্লী থেকে পারিশ্রমিক পেয়ে নিম্নবিত্ত পরিবারের সংসার চলছে।
চাকলা গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ, সোনাতনকাটি ক্লোজারের ওপর, কোলা গ্রামের বেড়িবাঁধের ওপর এবং হরিশ্খালি বাঁধের ওপর এখনও শ’ শ’ পরিবার বসবাস। তাদের স্যানিটেশন সুবিধা নেই। শ্রীপুর গ্রামের মোঃ আকরাম হোসেন সানা এ প্রতিবেদককে জানান, এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। অভাব অনটনে আছে এলাকার মানুষ। পূর্ণিমার জোয়ারে হরিশ্খালি বাঁধ দিয়া পানি ঢুকেছে।
এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ গোলাম রসুল জানান, বাঁধ সংস্কার হলেও পূর্ণিমায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার মানুষের ঘরে খাবার নেই। মানুষের কান্না থামছে না। চিংড়ি ঘের মালিকরা পূঁজি হারিয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, সরকার পূনর্বাসনের পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতাপনগর কর্মকার বাড়ি থেকে দরগাহতলার আইট পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। সোনাতনকাটি, শ্রীপুর, কুড়িকাহুনিযা, রুইয়েরবিল, সুভদ্রাকাটি, চাকলা, প্রতাপনগর, হিজলা, কোলা, শ্রীপুর ও মাদারবাড়িয়া গ্রামের পূণর্বাসনের কাজ হাতে নেয়া হচ্ছে। কল্যাণপুর থেকে এপিএস কলেজ পর্যন্ত ইটের সলিং এর কাজ চলছে। এখানকার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কল্যাণে সরকার সব ধরণের পদক্ষেপ নেবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই