ফুলতলায় চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক হোসেন মোহাম্মদ ডালিম (২০) আটক। তবে বিয়ের প্রলোভনে মোবাইল ডাটা কল সেন্টার কর্মী ধর্ষণ ঘটনায় আসামী ইবাদুল ভুঁইয়া (৩২) আটক হয়নি। থানায় পৃথক দুটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। সোমবার উভয় ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
পুলিশ জানায়, ফুলতলার দামোদর কারিকরপাড়ার কিশোরী কন্যা (১৭) এর এক সপ্তাহ পূর্বে বিয়ে হয়। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানেই সে পিত্রালয়ে চলে আসে। ফেসবুকের মাধ্যমে পূর্ব পরিচিত দামোদর শীতপাশাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও বিজিপি সদস্য আঃ কুদ্দুস শেখের পুত্র হোসেন মোহাম্মদ ডালিম (২০) তাকে চাকুরির প্রলোভন দেয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ৩১ জুলাই রাত ৯টায় ফুলতলার জামিরা সড়কের ঢাকা আবাসিক হোসেলের মালিক রাহাত আলী বিশ্বাসের ভাড়াটিয়া রিনা বেগমের ভাড়ার ঘরে ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে এনে ঘরের দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। রাত পৌনে ২টায় তার আত্মচিৎকার শুনে টহল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তবে ধর্ষক ডালিম পালিয়ে যায়। ওই রাতেই জামিরা বাজার থেকে ডালিমকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে হোসেন মোহাম্মদ ডালিমকে আসামী করে ওই কিশোরী ফুলতলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-১২, তারিখ-৩১/০৭/২০২০) দায়ের করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাউয়ুম জানান, ধর্ষক ডালিমের বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন ও গতকাল আদালতে ২২ ধারা জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এদিকে ফুলতলার তাজপুর গ্রামের মোঃ ফারুক হোসেন ভুঁইয়ার পুত্র মোঃ ইবাদুল ভুঁইয়া (৩২) দেড় বছর ধরে ফেসবুকের মাধ্যমে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার দক্ষিণআড়াইপাড়া গ্রামের মেয়ে এবং ঢাকার একটি মোবাইল ডাটা কল সেন্টারের কর্মীর সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ঢাকায় তার বাসায় মাঝে মধ্যে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে যাতায়াত করত। সে সূত্র ধরে গত ১৮ জুলাই ওই নারী ফুলতলায় ইবাদুলের বাড়িতে চলে আসে। সেখানে সপ্তাহ ধরে স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই অবস্থান করে। ইবাদুল ঈদ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বাড়িতে আনা হবে এমন আশ্বাস দিয়ে গত ২২ জুলাই তাকে ঢাকায় পাঠিয়ৈ দেয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইবাদুল মেয়েটিকে আনতে ঢাকায় আর যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে। অবশেষে গতকাল (সোমবার) সকালে তাজপুর গ্রামস্থ ইবাদুলের বাড়িতে উপস্থিত হয়। কিন্তু প্রতারক প্রেমিক ইবাদুল কৌশলে বাড়ি থেকে সটকে পড়ে। আবার ওই পরিবার থেকেও তাকে মেনে নেয়নি। ফলে বিয়ের প্রমাণ ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাসের বিষটি উল্লেখ করে গতকাল থানায় মেয়েটি বাদি হয়ে ইবাদুলকে আসামী করে ফুলতলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-০১, তারিখ-০৩/০৮/২০২০) দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানান, গতকালই ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আসামী আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম