খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  যশোরে গরমে অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
  বান্দরবানের রুমা থানচি সীমান্তবর্তী এলাকায় দু’টি মরদেহ উদ্ধার
  দেশে আবারও ৭২ ঘন্টার হিট অ্যালার্ট জারি : আবহাওয়া অধিদপ্তর
  দুই আইনজীবির আদালত অবমাননার শুনানি পিছিয়ে ৩০ জুন : আপিল বিভাগ
  নির্বাচনে বিদেশি শক্তির প্রভাব অনুভব করেনি আওয়ামী লীগ : কাদের

বাগেরহাটে চাকুরী ফিরে পেতে নৌবাহিনীর সাবেক নাবিক পরিবারের আকুতি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

চাকুরী ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নাবিক (সিকেটু)শেখ আবুল হাসানের পরিবার। মঙ্গলবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে চাকুরী ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী ও নৌ বাহিনী প্রধানের দয়া ভিক্ষা চান আবুল হাসান। এসময় আবুল হাসানের মা জাহানারা বেগম, স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে সিকেটু শেখ আবুল হাসান বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৯ সালের ১লা জানুয়ারি দেশ সেবারব্রত নিয়ে সিকেটু (নাবিক) পদবীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদান করি। খুলনা নৌবাহিনী ঘাটি তীতুমীরে চার মাস ২০ দিনের বুট ক্যাম্প প্রশিক্ষন শেষে চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলের অধীনে বা.নৌ.টা খাদেম জাহাজে যোগদান করি। দীর্ঘ দেড় বছর খাদেম জাহাজে দায়িত্ব পালন করি। এরমধ্যে আমার মা হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। জাহাজের ডিও লে. মাসুদুর রহমান জাহিদ স্যারের কাছে ছুটি চাই। জাহিদ স্যার আমাকে ছুটি না দিয়ে বেশি কথা বলেন। আমি মাকে দেখতে বাড়িতে চলে আসি। মাকে দেখে ৮৩ ঘন্টার মধ্যে আবারও জাহাজে যোগদান করি।

তিনি আরও বলেন, যোগদানের পরে, ডিও লে. মাসুদুর রহমান জাহিদ স্যার বাড়িতে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে আমাকে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলেন। লিখিত ভাবে স্যারের কাছে বিষয়টি জানাই। তারপরে ২০০১ সালের জুন মাসে জাহাজের সিও স্যারসহ সবাই মিলে আমার বিরুদ্ধে তিনটি গুরুত্বর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেন। আমি ওই শাস্তি মাথা পেতে নিয়ে চাকুরী করি। পরে ২০০১ সালের জুলাই মাসে কাপ্তাই বিএনএস শহীদ মোয়াজ্জেম ঘাটিতে আমাকে বদলি করে দেয়। কিন্তু ২০০১ সালের ১লা অক্টোবর বিএনপি ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকে ডিও লে. মাসুদুর রহমান জাহিদ সাহেব বিভিন্নভাবে আমাকে শাসাতে শুরু করে। বাংলাদেশ নেভিতে তুই কিভাবে চাকুরী করিস তা আমি দেখব এমন কথাও বলেন জাহিদ স্যার। এক পর্যায়ে তার বড় ভাই বিএনপি সরকারের আশির্বাদপুষ্ট কমোডোর আবুল কালাম আজাদ স্যারের মাধ্যমে আমাকে বাধ্যতা মূলক অবসরে পাঠিয়ে দেয়। অবসরে পাঠানোর সময় আমাকে কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি। কেন আমাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে তাও বলা হয়নি।
আবুল হাসান বলেন, বাধ্যতামূলক অবসরে দেওয়ার পরে আমি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দপ্তরে অসহায়ের মত ঘুরেছি, অনুনয় বিনয় করেছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। স্যারদের মন গলেনি। এর মাঝে ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর তারিখে ঢাকার খিলক্ষেতস্থ বা নৌজা শেখ মুজিব ঘাটিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার ও নাবিকদের পুনঃমিলনি অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত করা হয়। তখনও আমি নৌ প্রধান মহোদয়কে আমার প্রতি অবিচারের বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু আমার কথায় কোন কাজ হয়নি।

চাকুরী হারিয়ে স্ত্রী, সন্তান ও মাকে নিয়ে দারুন দূরঅবস্থার মধ্যে আছি। একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও আমি ভাড়ায় মটর সাইকেল চালিয়ে এবং মানুষের বাড়ি কামলা দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করি। আমার সন্তানরা কাঁদে ভাতের অভাবে। বাবা নৌবাহিনীতে চাকুরী করতেন জানার পরেও আমার এ অবস্থা কেন তা জানতে চায় সন্তানরা। আমি তাদেরকে কি উত্তর দিব। এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে চাকুরী ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও নৌবাহিনী প্রধানের দয়া চান অসহায় শেখ আবুল হাসান।

আবুল হাসানের বৃদ্ধ মা জাহানারা বেগম বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেকে নিয়ে আশায় বুক বেধে ছিলাম। ছেলের চাকুরী হারিয়ে আমরা খুব বিপাকে রয়েছি। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে আমাদের। আমার ছেলে যদি কোন ভুল করে থাকে তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিয়ে চাকুরী ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।চাকুরী ফিরে পেলে আমার সন্তান ও তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে স্বচ্ছলভাবে বাঁচতে পারবে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!