দীর্ঘ ১৪ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলতে নেমে সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংস ২২০ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। তারপরও স্বস্তিতে নেই পাকিস্তান। প্রথম দিন শেষে চার উইকেটে ৩৩ রান করে পাকিস্তান। ফলে দিন শেষে ছয় উইকেট হাতে নিয়ে ১৮৭ রানে পিছিয়ে পাকিস্তান।
আজ মঙ্গলবার করাচিতে শুরু হয় পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে দ্রুত রান তুলছিলেন প্রোটিয়া দুই ওপেনার ডিন এলগার ও আইডেন মার্করাম। ওয়ানডে স্টাইলে খেলে প্রথম ২৯ বলে ৩০ রান করে ফেলেন তাঁরা। তবে পঞ্চম ওভারের শেষ বলে এই জুটি ভাঙেন পাকিস্তানের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শাহিন শাহ আফ্রিদি। ১৬ বলে তিনটি চারে ১৩ রান করা মার্করামকে শিকার করেন আফ্রিদি।
দলীয় ৩০ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর দলের রানের চাকা ঘুরান এলগার ও রাসি ভ্যান ডান ডুসেন। ইনিংসের শুরুতে দ্রুত রান উঠলে, দেখে শুনে খেলতে থাকেন তাঁরা। তবে জুটিতে ৩৩ রানের বেশি করতে পারেননি এলগার-ডুসেন। ১৭ রান করে রান আউট হন ডুসেন।
এলগার-ডুসেনের সঙ্গে বড় জুটির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন এলগার। সেই ব্যর্থতা পরবর্তী সময়েও অব্যাহত থাকে। ফাফ দু প্লেসিস, অধিনায়ক কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে বড় জুটি গড়ার আভাস দিয়েও পারেননি এলগার। তৃতীয় উইকেটে দু প্লেসিসের সঙ্গে ৪৫ ও ডি ককের সঙ্গে ২৫ রানের জুটি গড়েন। আর তেম্বা বাভুমার সঙ্গে তিন রানের বেশি যোগ করতে পারেননি এলগার।
ডুপ্লেসিস ২৩ রানে স্পিনার ইয়াসির শাহ ও ডি কক ১৫ রানে আউট করেন অভিষেক টেস্টে খেলতে নামা বাঁ-হাতি স্পিনার নুমান আলী।
দলীয় ১৩৬ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন এলগার। এর আগে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন এলগার। নুমানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৫৬ রানে বিদায় নেওয়া এলগার ১০৬ বলের ইনিংসে নয়টি চার মারেন।
ওপরের সারির ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হওয়ার পর, দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের পরের দিকেও একই চিত্র দেখা যায়। তেম্বা বাভুমা ১৭ ও দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা জিওর্জি লিন্ডে ৩৫ রানে থামেন। দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নামা হাসান আলী তুলে নেন লিন্ডার উইকেট। আর ডুসেনের মতো ভুল করে রান আউটের ফাঁদে পড়েন বাভুমা।
স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের বিদায়ে ২০০ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শংকায় পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু সেটি হতে দেননি পেসার কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডি। শেষ পর্যন্ত দলের স্কোর ২২০ রান পর্যন্ত নিয়ে যান তাঁরা। শেষ ব্যাটসম্যান এনগিডি আট রানে থামলেও, ৩৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত ২১ রান করেন রাবাদা। পাকিস্তানের ইয়াসির তিনটি, আফ্রিদি-নোমান দুটি করে এবং হাসান একটি উইকেট নেন।
৬৯.২ ওভার বল করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুটিয়ে দিয়ে নিজেদের ইনিংস শুরু করে পাকিস্তান। দিনের শেষ ভাগে ১৮ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে বিপদেই পড়ে পাকিস্তান। স্কোর বোর্ডে ৩৩ রান উঠতেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন চার ব্যাটসম্যান। দুই ওপেনার অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ইমরান বাট নয় ও আবিদ আলি চার রান করে রাবাদার শিকার হন। অধিনায়ক বাবর আজমকে সাত রানে থামান দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার কেশব মহারাজ। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমে খালি হাতে ফিরেন শাহিন আফ্রিদি। শিকার হন এনরিচ নর্টির।
দিন শেষে আজহার আলি ও ফাওয়াদ আলম পাঁচ রান করে অপরাজিত আছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার রাবাদা আট রানে দুই উইকেট নিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর– দক্ষিণ আফ্রিকা : ২২০/১০, ৬৯.২ ওভার (এলগার ৫৮, লিন্ডে ৩৫, ইয়াসির ৩/৫৪)।
পাকিস্তান : ৩৩/৪, ১৮ ওভার (বাট ৯, বাবর ৭, রাবাদা ২/৮)।