শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট শুরু হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়ি ভাংচুর ও ভোটারদের বাধা দানের মধ্যে দিয়েই চলছে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ভোট গ্রহণ। এই পৌরসভার সবগুলো কেন্দ্র আগে থেকেই ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। সময় যতই গড়াচ্ছে ততোই ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক, কমছে কেন্দ্রে যাওয়ার হার।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ভোটগ্রহণের শুরুতেই দেখা যায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভোটাররা পরিবারের সদস্যদের সাথে এসে ভোট দিতে থাকেন। ভোটের দুইদিন পূর্বে এক কাউন্সিলর প্রার্থীর মরদেহ উদ্ধার এবং আরেক প্রার্থীর ভাই খুনের ঘটনার পরও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। সকালে পৌরসভা এলাকার একটি কেন্দ্রের বাইরে দু’দল ভোটারের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তারা নৌকা ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র জগ প্রতিকের প্রার্থীর সমর্থক বলে জানা যায়। এ সময় আলাউদ্দিন (৪৫) নামের একজন আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এছাড়া শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে ভেটারদের নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে ফেরত পাঠাতে দেখা গেছে।
এদিকে ললিত মোহন ভুইয়া ও বারইপাড়া কেন্দ্রসহ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটাররা উদ্বেগের মধ্যেই বোট দিয়েছেন। এছাড়া ১৮ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খুলনা বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ কয়েকটি কেন্দ্রে দফায় দফায় ইভিএম যন্ত্র বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটলেও পূনরায় সেসব স্থানে পরিবর্তিত ইভিএম চালু করে ভোট নেয়া হয়।
খুলনা বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রর প্রিজাইডিং অফিসার মামুন খাঁন জানান, “কিছু সময় ইভিএম অচল থাকলেও নতুন করে ইভিএম মেশিন এনে ভোট গ্রহণ শুরু করা হয়।”
নগরপাড়া এলাকার ভোটার বিশ্বজিত অধিকারী জানান, তার দাদি ভক্তি রাণী অধিকারীকে নিয়ে এসে ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরত যাচ্ছেন। দাদি এখন আর ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না, তারপরও এবার নতুন ইভিএম মেশিনে ভোট হচ্ছে জেনে তিনি আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাই নিয়ে এসেছেন।
এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মাসুদ আহম্মেদ জানান, তার কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ভালো। সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে তার কেন্দ্রে দুই শতাধিক ভোট পড়েছে।
নাসির উদ্দিন নামের আরেক ভোটার জানান, ভোটের দুইদিন পূর্বে এই পৌরসভায় খুন, মরদেহ উদ্ধারের মতো ঘটনা ঘটেছে। এতে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তাতে শান্তিপূর্ণ ভোট নিয়ে তাদের ভয় ছিল। তবে বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কিছুটা বিশৃঙ্খলা ছাড়া বাকি কেন্দ্রগুলোতে ভালো ভাবে ভোট হতে দেখেছেন।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ সাংবাদিকদের জানান, এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহন চলছে। আশা করছেন এই পরিবেশেই ভোট গ্রহন শেষ হবে। শৈলকুপায় মেয়র পদে ৪ জন, ৮ টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন, ও ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের বিপরীতে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। ২৮ হাজার ৬৩২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে নির্বাচন কমিশন আশা করছেন। তাদের সকল ভয় ভীতি দুর করতে ১৭ জন ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি, আনসার বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। অবশ্য এখানকার ১৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলো ঝুকিপুর্ন হিসেবে ধরা হয়েছে।
তবে ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসার রোকনুজ্জামান জানিয়েছেন, নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক আছে, শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট গ্রহন চলছে।