নিজেদের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সিদ্ধান্তে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারবে। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক ভার্চ্যুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য আইন অনুযায়ী একাডেমিক বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কোভিড-১৯ সংকটের কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ইউজিসি উপাচার্যের সঙ্গে সভা করে সার্বিকভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল। ইউজিসি জানিয়েছে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপাচার্যরা ছাড়াও ইউজিসির সদস্যরা সংযুক্ত ছিলেন।
পরীক্ষা, ক্লাস ও মূল্যায়নের সাত সুপারিশ
সভায় ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর করোনার সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন বিষয়ে সাতটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো কোভিড-১৯ সংকটের কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, চিকিৎসাসহ অন্যান্য শাখার অসমাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস এবং তার মূল্যায়ন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে। সেমিস্টার পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ সেমিস্টারের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাসে পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করতে হবে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস শুরুর সর্বোচ্চ জন্য এক ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে। কোভিড-১৯ সংকটের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জারি করা নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন ও অনুসরণ করতে হবে।
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষার মান নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াহুড়ো না করে সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন।
সভায় উপাচার্যরা জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। অসমাপ্ত সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে। পরীক্ষা না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন না হলে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে।
জাতীয় স্বার্থে পরীক্ষা নেওয়া দরকার। সম্প্রতি বিজ্ঞাপন দেওয়া বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের সময় বাড়াতে পিএসসিকে পত্র দেওয়ার জন্য ইউজিসিকে অনুরোধ করেন উপাচার্যরা। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে।
খুলনা গেজেট/কেএম