চিতলমারী উপজেলায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। এই ২ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র দুইজন চিকিৎসক কাজ করছেন। রাতদিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে গিয়ে তাঁরা এখন হিমশিম খাচ্ছেন। যে দু’জন চিকিৎসক বর্তমানে সেবা দিচ্ছেন তাঁরাও উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের জন্য মার্চ মাসে ঢাকায় চলে যাবেন। তখন এ উপজেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাবে।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক শর্মী রায় এ কথা জানান।
চিকিৎসক শর্মী রায় আরও জানান, প্রায় ২ লাখ মানুষের ৫০ শয্যা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ৩ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছেন। তাদের মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই দুইজন চিকিৎসক দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। জনবল সংকটের কারণে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসা অসহায়, গরিব রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৬৩টি ওয়ার্ডের ১২৮টি গ্রাম থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪ শতাধিক রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এদের অধিকাংশই অসহায় ও গরিব। বর্তমানে এখানে মোট ১৬৪টি পদের মধ্যে ৫১টি পদই শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়সহ ২৭ জন চিকিৎসকের স্থলে ১০ জন কর্মরত আছেন।
তাদের মধ্যে দুইজন প্রেষণে (ডেপুটিশনে) কর্মরত রয়েছেন। এখানে বর্তমানে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (স্কিন এন্ড ভিডি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অপথালমোজি), দুইজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থপেডিকস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথিওলজী), দুইজন সহকারী সার্জন, ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪ জন সহকারী সার্জনের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
এছাড়া এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, পরিসংখ্যানবিদ, ক্যাশিয়ার, স্টোরকিপার, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক, নাসিং সুপারভাইজার, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব), মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (এস আই), সহকারী নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী ১৭ টিসহ দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ২৫ টি পদ এবং চতুর্থ শ্রেণির ৬টি পদসহ মোট ৫১টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ফলে ৫০ শয্যা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা অসহায়, গরিব রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক শর্মী রায় জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম

