শুক্রবার । ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ । ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
নিবন্ধন দ্রুত বাড়বে আশাবাদ রাষ্ট্রদূতের

ভোটার নিবন্ধনে পিছিয়ে পড়েছে আমিরাত প্রবাসীরা

ফরহাদ হুসাইন, আরব আমিরাত থেকে

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মত সংযুক্ত আরব আমিরাতেও চলছে ভোটার নিবন্ধনের কাজ। জনসচেতনতার অভাব, নিবন্ধন অ্যাপে নিজস্ব পোস্ট বক্স নম্বর থাকার বাধ্যবাধকতা, ভোটার আইডি স্ক্যানে বিড়ম্বনা ও অ্যাপে কারিগরি জটিলতার অভিযোগ ভুক্তভোগী প্রবাসীদের। তবে রাষ্ট্রদূতের আশা, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে অধিকাংশ প্রবাসী সচেতন নন। প্রায় ১১ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী অধ্যুষিত আরব আমিরাতে নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, গত ১০ দিনে নিবন্ধিত হয়েছে মাত্র ১৮ হাজার ৩শ’ প্রবাসী, যা প্রত্যাশার তুলনায় নিতান্ত অপ্রতুল। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপলিকেশনে সহজে ভোট দিতে নিবন্ধন করা যায়—এই তথ্য ও পদ্ধতি না জানার ফলে নিবন্ধনে পিছিয়ে পড়েছে আমিরাত প্রবাসীরা। তাছাড়া নিবন্ধন করতে এনআইডি কার্ড স্ক্যানে বিড়ম্বনা, অ্যাপ বন্ধ থাকাসহ নানা জটিলতায় নিবন্ধন বিমুখ হচ্ছে প্রবাসীরা। এই পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিবন্ধনে উদ্বুদ্ধ করতে গতকাল (৯ ডিসেম্বর) দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবনে প্রচারণামূলক সভার আয়োজন করা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুবাইয়ের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। সভায় আরও বক্তৃতা করেন কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আশীষ কুমার সরকার, শ্রম কাউন্সিলর আব্দুস সালাম, কনস্যুলেটের প্রেস সচিব আরিফুর রহমানসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন, গণমাধ্যম কর্মী ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।

সভায় প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে পোস্টাল ব্যালটের গুরুত্ব, আবেদন পদ্ধতি এবং প্রবাসী ভোটারদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ ভোটারদের কঠোরভাবে সতর্ক করে বলেন, কাকে ভোট দেওয়া হয়েছে, সেই তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বা অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। ব্যালটকে তিনি একজন ভোটারের গোপনীয় আমানত হিসেবে উল্লেখ করেন, যার ব্যবহার অবশ্যই দায়িত্বশীলভাবে করতে হবে।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, প্রবাস থেকে প্রথমবারের মতো ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে ভোট প্রদান একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। তিনি মনে করেন, এই উদ্যোগটি পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করবে।

দূতাবাস ও কনস্যুলেটের ফেসবুক পেজে নিয়মিত পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের নিয়ম জানানো হচ্ছে। তাই সকল প্রবাসীকে নিয়মিতভাবে পেজ দুটিতে চোখ রাখার অনুরোধ জানান মিশন কর্মকর্তারা।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নিবন্ধন শেষে তথ্য সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যাবে। তাদের মাধ্যমে পৃথক ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এরপর নির্ধারিত সময়ে ভোটারের ঠিকানায় তিন খামের ভেতর ব্যালট পাঠানো হবে। একটি খামের ভেতরে থাকবে ব্যালট পেপার, আরেকটিতে আসন নম্বর ও রিটার্নিং কর্মকর্তার ঠিকানা উল্লেখ থাকবে। ভোটার ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে দ্বিতীয় খামে ভরে নিকটস্থ পোস্ট বক্সে জমা দিলেই ভোটের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

আরেক ধাপে বলা হয়েছে, খাম পাওয়ার পর ভোটারকে অ্যাপে লগইন করে মোবাইল নম্বর নিশ্চিত করতে হবে, নিজের ছবি তুলতে হবে এবং খামের ওপর থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে। এতে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর আসনের সব প্রার্থীর নাম দেখা যাবে। এরপর খাম খুলে ব্যালটে ভোট দিয়ে একটি ঘোষণাপত্রে সই করতে হবে। ব্যালট খামে ভরে তা নিকটস্থ পোস্ট অফিসে জমা দিলেই ভোট সম্পন্ন হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন