শুক্রবার । ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ । ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
ক্ষুব্ধ খুলনার নারী ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকরা

এক মাসের জন্য বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠ ভাড়া, বন্ধ খেলাধুলা

নিজস্ব প্রতি‌বেদক

খুলনার নারীদের খেলাধুলার জন্য পৃথক কোনো মাঠে নেই। নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালের পাশে অবস্থিত বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠে প্রশিক্ষণ ও খেলাধুলা করেন নারীরা। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের আন্তঃ জেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট, অনুশীলন, বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন হয় মাঠটি।

নারীদের একমাত্র খেলার মাঠটি এক মাসের জন্য ভাড়া দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠ বরাদ্দ পেয়েছে বাংলাদেশ উইভার্স প্রোডাক্টস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন। মাত্র ৯ লাখ টাকায় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে মাঠ ভাড়া নিয়ে কোটি টাকার মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছেন তারা।

ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, “আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের শিশু-কিশোরীদের খেলার মৌসুম। এই সময়ে মাঠটি বন্ধ করে দিলে সব ধরনের খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হবে মেয়েরা। এছাড়া খেলার মাঠে মেলাসহ সব ধরনের আয়োজন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছিল। জেলা প্রশাসনসহ খুলনার রাজনৈতিক নেতারাও এর সঙ্গে একমত। কিন্তু অন্তবর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আবারও খেলার মাঠে এক মাসের জন্য মেলার আয়োজন করেছে সুবিধাভোগী গোষ্ঠী। পরবর্তী মেলার মেয়াদ আরও বাড়বে। মেলার নামে কোটি কোটি টাকার হাতবদলের নিচে চাপা পড়বে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার আগ্রহ উচ্ছাস।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ উইভার্স প্রোডাক্টস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে বিভাগীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়। স্থানীয় কিছু সংগঠকদেরও তারা উৎকোচ দিয়ে মুখ বন্ধ করেন। যার ফলে উৎকোচ নিয়ে ক্রীড়া পরিষদের জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারাও মেলার জন্য মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন, মেলা মানেই লাখ লাখ টাকার হাতবদল। এর পেছনে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সুবিধাভোগী কিছু ক্রীড়া সংগঠক এবং ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা জড়িত থাকেন। তাদের অনৈতিক অর্থ উপার্জনের বলি হতে হয় শিশু-কিশোর-কিশোর ও ক্রীড়ামোদীদের।

খুলনা জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক দপ্তর সম্পাদক সিলভী হারুন বলেন, “খুলনায় মেয়েদের খেলার জন্য নিরাপদ জায়গা নেই। মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠে ভাড়া দেওয়া হলে শেষ সুযোগটিও নষ্ট হবে। আমরা এই আয়োজন বন্ধের দাবি জানাই।”

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক প্রকৌশলী আওলাদ হোসেন, জেলা প্রশাসকের সুপারিশে ক্রীড়া পরিষদ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে গাজীপুর জেলা শিমুলতলিতে একই ব্যক্তি মেলার আয়োজন করেছিল। অনৈতিক কার্যক্রমের অভিযোগে ডুয়েটে ছাত্ররা মেলা ভেঙে দিয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন