মোংলার রাব্বি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় চিকিৎসকদের অবহেলায় এক প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবাই পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
ভিকটিমের স্বামী রুহুল আমীন জানান, সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য মোংলা পৌরসভাধীন মাদরাসা রোডে অবস্থিত রাব্বি ক্লিনিকে তার স্ত্রী বৃষ্টি আক্তারকে (১৯) ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে ডা. জিয়াউল আহসান (এমবিবিএস, পিজিটি সার্জারি) এবং ডা. আল-মামুনের মাধ্যমে বৃষ্টি বেগমের সিজার করানো হয়। অপারেশনের এক পর্যায়ে ভুল চিকিৎসা বা চিকিৎসাগত অবহেলার কারণে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগ করা হয়, রোগীর মৃত্যুর পর ভিকটিমের স্বজনদের না জানিয়ে ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক গোপনে ক্লিনিক ত্যাগ করেন। এর আগেও ক্লিনিকটির নিম্নমানের সেবার বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা দাবি করেন- যে চিকিৎসক সিজার অপারেশন পরিচালনা করেছেন, তার বৈধ সিজারিয়ান সনদ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হোক। পাশাপাশি অবহেলা, অযত্ন ও ভুল চিকিৎসায় আর কোনো মায়ের মৃত্যু না ঘটে- সেজন্য কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি বাড়ানো এবং ক্লিনিকটি বন্ধের জোর দাবি জানান তারা।
মোংলা থানার ওসি (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহিন হাসান জুয়েল জানান, মোংলার ঢালীরখণ্ড এলাকার বৃষ্টি আক্তার রাব্বি ক্লিনিকে সিজারের জন্য ভর্তি হন। অপারেশনে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নিলেও পরবর্তীতে চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্লিনিকটি সিলগালা করেন। এ বিষয়ে দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে নবজাতক শিশুটি মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।

