শুক্রবার । ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ । ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

আরব আমিরাতে স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী পালিত

ফরহাদ হুসাইন, আমিরাত প্রতিনিধি

উৎসবমুখর পরিবেশে আজ স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী পালন করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দিনটি তারা ‘ঈদ-উল-ইত্তেহাদ’ হিসেবে উদযাপন করছে। সরকার চার দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে এবং শহরজুড়ে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন।

আমিরাতের প্রধান প্রধান সড়কসহ সর্বত্র জাতীয় পতাকার পাশাপাশি আলোকিত “ফিফটি–ফোর” লেখা সজ্জা দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। মোটর র‍্যালি, বিমান মহড়া, ড্যান্সিং ফাউন্টেন, আলোকসজ্জা, আতশবাজি, উঁচু ভবনে রঙিন নান্দনিক সাজ- সব মিলিয়ে উৎসবের আবহে ভরপুর পুরো দেশ। শপিং মল, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, সুপার ও হাইপার মার্কেটও সেজেছে নানা সাজে।

৫৪তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় নাগরিকসহ প্রবাসীদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এ উপলক্ষে আবুধাবি ২হাজার ৯৩৭; দুবাই ২হাজার ০২৫; আজমান ২২৫; ফুজাইরাহ ১২৯; শারজাহ ৩৬৬ এবং রাস আল-খাইমাহ ৮৫৪ সহ মোট ৬ হাজার ৫৩৬ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আজ আমিরাতজুড়ে ফ্রি গাড়ি পার্কিং ও মোবাইল ডেটা প্রদান করা হচ্ছে। অনেক প্রদেশে ট্রাফিক জরিমানায়ও ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে।

পারস্য উপ-সাগরের দক্ষিণ-পূর্ব ও ওমান উপসাগরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সংযুক্ত আরব আমিরাত সাতটি আমিরাত- আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, উম্মুল কুয়াইন, ফুজাইরাহ ও রাস-আল-খাইমাহ নিয়ে গঠিত। এটি ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর একটি ফেডারেল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে আমিরাত বিশ্বের অন্যতম আধুনিক তেল রপ্তানিকারক দেশ। এর অর্থনীতি বহুমুখী—বিশেষত দুবাই এখন পর্যটন, খুচরা বিক্রি ও আর্থিক লেনদেনের বিশ্বকেন্দ্র। এখানে রয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন ও বৃহত্তম মানবসৃষ্ট সমুদ্রবন্দর। সাম্প্রতিক SWF রিপোর্টে আবুধাবি ‘বিশ্বের ধনী শহর’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

একসময় দারিদ্র্যপীড়িত আরব আমিরাতে গত শত বছরে, বিশেষ করে গত ৫০ বছরে ঘটেছে চোখ ধাঁধানো পরিবর্তন। জেলে পল্লী থেকে শুরু করে আজ সুউচ্চ অট্টালিকা ও সমৃদ্ধির বিস্ময় গড়ে উঠেছে। ১৯৬০-এর দশকে আবুধাবিতে তেল আবিষ্কারের পর দেশটি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহইয়ান প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি জাতির পিতা হিসেবে সম্মানিত।

২০০৪ সালের ২ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে তার পুত্র শেখ মোহাম্মাদ বিন জায়েদ আল নাহইয়ান আবুধাবির শাসক। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে দুবাইয়ের শাসক ও আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মাকতুম বিন রশিদ আল মাকতুম মৃত্যুবরণ করলে ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন