ভারতের পেঁয়াজ রফতানিকারকরা বড় ধরনের মন্দার মুখে পড়েছে। এর পেছনে মূল কারণ বাংলাদেশের আত্মনির্ভরতা অর্জনের চেষ্টা এবং সৌদি আরবের নয়াদিল্লি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। এছাড়া দেশ দু’টি পাকিস্তান ও চীনের মতো নতুন বাজারে ঝুঁকে পড়ছে। ফলে ভারতের বাজার চাপে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সময় ভারতের মোট পেঁয়াজ রফতানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হতো বাংলাদেশে। অথচ গত আট মাসে ঢাকা কোনো পেঁয়াজই নেয়নি। এদিকে, সৌদি আরবও দেশটি থেকে প্রায় এক বছর ধরে খুব কম পেঁয়াজ কিনেছে। ফলে ভারতীয় বাজার বড় ধরনের চাপে পড়েছে।
রফতানিকারকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ভারতে উৎপাদিত পেঁয়াজের বীজ অবৈধভাবে বাইরে চলে যাচ্ছে। সেই বীজেই ভারতের পুরোনো বাজারগুলো নিজেদের উৎপাদন বাড়িয়ে এখন প্রায় আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের বহু বছরের আধিপত্য ভেঙে পড়ছে।
ভারত ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাস এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আরো পাঁচ মাস পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ রাখে। এতে ভারতনির্ভর দেশগুলোতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ২০২০ সালে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে ভারতের কাছে কূটনৈতিক বার্তাও পাঠায়।
এরপর স্থানীয় কৃষকদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ কেনা কমিয়ে দেয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে ৭.২৪ লাখ টন পেঁয়াজ রফতানি করে, যা তাদের মোট রফতানির ৪২ শতাংশ। কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ মাত্র ১২,৯০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। যদিও কেউ কেউ এর পেছনে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন। তবে রফতানিকারকরা ঘনঘন নিষেধাজ্ঞাকে এর মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এদিকে, ভারতীয় রফতানিকারকদের দাবি, প্রায় এক বছর ধরে সৌদি আরবও তাদের থেকে পেঁয়াজ নিচ্ছে না। কারণ ইয়েমেন ও ইরান থেকে তারা আরো কম দামে পেঁয়াজ পাচ্ছে।
ফিলিপাইনের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, চীনা পেঁয়াজ না থাকলে কেবল তারা ভারতের পেঁয়াজ কিনে থাকে।
প্রতিবেশী দেশগুলো ভারতীয় বীজ ব্যবহার করেই এখন আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে। ফলে রফতানিকারকরা হর্টিকালচার কমিশনারের কাছে প্রতিযোগী দেশগুলোর উদ্দেশে পেঁয়াজের বীজ রফতানি বন্ধ করার দাবি তুলেছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম

