শনিবার । ২৯শে নভেম্বর, ২০২৫ । ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ইসলাম অবমাননার অভিযোগ গোবিপ্রবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে; বিচারের দাবি শিক্ষার্থীদের

গোবিপ্রবি প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে ইসলাম ও রাসূল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এনে বিচারের দাবি জানিয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে ইসলাম ও রাসূল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে তার বিচারের দাবি জানান।

অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম শিক্ষার্থী সমাজের পক্ষ থেকে জানাতে চাই যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক আরাফাত রহমান নোমান (সহকারী অধ্যাপক) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ইসলামের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর, কটূক্তিমূলক ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতমূলক মন্তব্য করেছেন। যেমন: ইসলামের শেষ নবীর জীবনীতে গর্ব করে বলা হয় তিনি নিরক্ষর ছিলেন। তাহলে তার উপর আস্ত একটা আসমানি কিতাব নাজিল হলো কিভাবে? ধর্মে যেভাবে শুধু পুরুষের ভোগবিলাসের যাবতীয় ব্যবস্থা তৈরি করে রেখেছে, তার আরেক উদাহরণ হচ্ছে এই চার বিয়ের নিয়ম।”

তার প্রকাশিত পোস্টে ব্যবহৃত ভাষা মুসলিম শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে গভীর আঘাত করেছে। একজন শিক্ষক হিসেবে তার এমন বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধিমালা, শিক্ষক নৈতিকতা নীতিমালা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার মৌলিক দায়িত্বের পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রীয় আইনের (বাংলাদেশের সংবিধানের ২(ক), ৪১(১), ৩৯(১) ও বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ধারা ২৯৫(ক)) সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এ ধরনের বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি, একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি এমন দায়িত্বহীন মন্তব্য করার নৈতিক অধিকার রাখেন না।”

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “আমরা মুসলিম শিক্ষার্থী সমাজের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত এবং উপযুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি প্রদানের অনুরোধ করছি।

জানা যায়, ২৭ নভেম্বর আরাফাত রহমান তার নিজ ফেসবুক আইডিতে ইসলাম ধর্মের নিয়ম ও রাসূল (সা.)-কে নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তিমূলক পোস্ট করেন, যা মুহূর্তের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করে। তার ফেসবুক পোস্টের কিছু অংশ হলো,”পৃথিবীতে পুরুষ বিয়ে করতে পারবে ৪টা, বেহেশতে গেলে হুর পাবে ৭২ জন। সেক্সুয়াল পারভার্ট ও প্রিডেটরদের জন্য শারীরিক চাহিদা মেটানোর দারুণ ব্যবস্থা। তো একই ব্যবস্থা যদি নারীও দাবি করে? শুধু পুরুষকেই কেন যাবতীয় সেক্সুয়াল সুবিধা দেওয়া হবে? নারীকে কেন সমাজে সতী-সাবিত্রী হিসেবে সাজিয়ে রাখতে হবে? নারী-পুরুষের অধিকারের সমতায় কেন বাংলাদেশের ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রবল অ্যালার্জি?”

তিনি তার অন্য একটি পোস্টে বলেন, “ইসলামের শেষ নবীর জীবনীতে গর্ব করে বলা হয় তিনি নিরক্ষর ছিলেন। তাহলে তার উপর আস্ত একটা আসমানি কিতাব নাজিল হলো কিভাবে?”

এমন বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এরই প্রেক্ষিতে আজ শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন