রাজধানীর মহাখালী কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বহু ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েক’শ মানুষ। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালান ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। এ ঘটনায় কোন হতাহত ও প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও পুড়ে যায় শতাধিক বাড়িঘর ও সব মালামাল। তবে এখন পর্যন্ত আগুনের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছে সেটি জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের খবর পেলেও যানজটের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে ফায়ার সার্ভিসের ৩৫ মিনিট লেগে যায়। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। পর্যায়ক্রমে ইউনিট সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ঘটনাস্থলে পানির সংকটের কারণে পানিসহ আরও কয়েকটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, পানি সংকটের কারণেই আমরা ইউনিট বাড়িয়ে মোট ২০টি করেছি। আমাদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
মঙ্গলবার রাত নয়টায় ঘটনাস্থলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেন্টেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখানে ১৬ থেকে প্রায় ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুনের তীব্রতা ধীরে ধীরে কমছে। সুতরাং এই পূর্ব এবং উত্তর দিকের আগুন যদি পড়ে যায়, আমরা তাহলে বলতে পারি পুরো আগুনটাকে আমরা কমফাইন্ড করে ফেলেছি। কমফাইন্ডের পরবর্তী স্তর যেটা, আমাদের খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে কোথায় কোথায় আগুনের সোর্স রয়েছে এটা যখন আমরা নিশ্চিত হবো তখন আমরা নিয়ন্ত্রণ দিবো। একটু সময় লাগছে কারণ বুঝতেই পারছেন সীমাবদ্ধতা প্রচুর। যেমন আমাদের গাড়ি আসতে পারছিলো না সবগুলো, আমাদের এই বিশাল এরিয়াতে সবগুলো বড় বড় লাইন জোড়া দিয়ে দিয়ে এই আগুনের কাছে পৌঁছাতে হচ্ছে। প্রচুর পরিমাণে ক্রাউড রয়েছে। কেউ কেউ সহযোগিতা করতে গিয়ে পাইপ কেটে ফেলেছে, পাইপের জোড়া খুলে ফেলছে এইরকম কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আমরা আশা করছি, যে আগামী দুই-এক ঘন্টার মধ্যে একটা ভালো খবর দিতে পারবো।
তিনি বলেন, পানির স্বল্পতা নেই, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে চারদিকে হয়তো পানি আছে কিন্তু পানিটা নির্দিষ্ট যে সোর্স, আগুনটা যেখানে জ¦লছে সেই আগুনে পৌঁছাতে একটু সময় লাগছে। আমরা শুরুতেই দ্রুত পৌঁছাতে পারতাম। পৌঁছাতে আমাদের প্রায় ৩০-৩৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে প্রথম ইউনিটের। তারপর একে একে ইউনিট আসতে আরও সময় লেগেছে। কারণ সবাই যে ক্রাউড এবং যে পরিমাণ যানবাহন ছিল আশপাশে আমাদের বড় বড় গাড়িগুলো একেবারে কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেনি। একারণে শুরুতে আগুনটা আমরা এসে দেখেছি যে প্রায় ডেভেলপ স্তরে চলে এসেছে। যখন আগুনের স্তর তৃতীয় স্তরে চলে আসে তখন আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে একটু সময় লাগে।
এর আগে চলতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি মধ্যে রাতে এই বস্তিতে আগুনে পুড়ে যায় অসংখ্য ঘর। গত বছরের ২৪ মার্চ ও ১৮ই ডিসেম্বরেও আগুনে পুড়ে কড়াইল বস্তি। প্রায় নব্বই একর জায়গার ওপর ১০ হাজারের মতো ঘর রয়েছে এই বস্তিতে।
খুলনা গেজেট/এনএম

