বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় শীতের শুরুতেই অতিথি পাখি শিকারের প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বিল ও জলাশয় থেকে ধরা এসব নিষিদ্ধ পরিযায়ী পাখি স্থানীয় হাট-বাজারে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি শিথিল থাকায় শিকারচক্রের তৎপরতা দিন দিন আরও বেড়ে চলেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও শীত এলেই বারুইডাঙা, বগুড়া বিল, কোদলা বিল, হুচলা, ডহর মৌভোগ, মুলঘর, ফলতিতা, কলকলিয়া ও কেন্দুয়া বিলসহ উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়ে আশ্রয় নিচ্ছে অতিথি পাখি। পাখির উপস্থিতি বাড়তেই সক্রিয় হয়ে ওঠে শিকারিরা। জাল ও ফাঁদ পেতে রাতের আঁধারে ধরে ফেলা হয় বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। ধরা পড়া পাখিগুলো ফকিরহাট বাজার, মানসা বাজার, ফলতিতা বাজার, কলকলিয়া ও টাউন নওয়াপাড়া হাটে খোলা ও গোপনে বিক্রি হচ্ছে। পরিচিত ক্রেতাদের জন্য ফোনে অর্ডার নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পাখি পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি জোড়া পাখি আকারভেদে ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিক্রি হওয়া পাখির মধ্যে নাইট হেরন, সোনাজঙ্গ, ডুঙ্কর, খেনি, স্নাইপ, খুরুলে, জলকৌড়ি, বুনো হাঁস, বক, সারস, কুনচুষীসহ বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। পাশাপাশি দেশি ঘুঘু ও ডাহুকও বিক্রি হতে দেখা যায়।
বাগেরহাটের পাখি বিশেষজ্ঞ শরীফ খান বলেন, “সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও হিমালয়সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতি বছর শীতের শুরুতে অতিথি পাখি বাংলাদেশে আসে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে যে-কোনো বন্যপাখি শিকার অপরাধ। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।”
ফকিরহাট রেঞ্জের বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, “অতিথি পাখি শিকার ও বিক্রি বন্ধে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আইরিন জানান, “পাখি শিকার ও বেচাকেনায় কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং জনসাধারণের সহযোগিতা প্রয়োজন।
খুলনা গেজেট/এনএম

