নগরীর লবণচরা থানার দক্ষিণ টুটপাড়া দরবেশ মোল্লা গলির আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় পুলিশ তরিকুল ইসলাম নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে দক্ষিণ টুটপাড়া এলাকার মোল্লাপাড়া আরজু কালভার্টের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার যুবক ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ আজহারুল ইসলামের ছেলে। বৃহস্পতিবার সকালে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
তরিকুলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, “দরবেশ মোল্লা গলির ট্রিপল মার্ডারটি বর্তমান খুলনা নগরীর একটি আলোচিত ঘটনা। ঘটনাটি আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। গোয়েন্দা তথ্য ও সোর্সের সাহায্যে বুধবার রাতে তরিকুল ইসলাম নামে এক যুবককে নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়ার মোল্লাপাড়া কালভার্টের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রিপল মার্ডারটি স্পর্শকাতর হওয়ায় রাতে তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি গোপন রাখা হয়। সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে পুলিশকে। যেগুলো তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তরিকুলের মা বলেন, “সোমবার রাত দেড়টার দিকে লবণচরা থানার কয়েকজন পুলিশ তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে বলতে থাকে ক’লাখ টাকা পেয়েছেন। আপনার ছেলে কোথায়। পরে ছেলের ঘর দেখিয়ে দেই। ওই রাতে ছেলেকে তারা থানায় নিয়ে গিয়ে চোখ বেঁধে ব্যাপক মারধর করে।”
তরিকুলের স্ত্রী নাসিমা আক্তার বলেন, “রাত দেড়টার দিকে খাবার খেয়ে আমার স্বামী ঘুমাতে যায়। ওই রাতে সমস্ত বাড়ি পুলিশ ঘিরে ফেলে। পুলিশ তাকে বলতে থাকে সোনার জিনিস কই। একপর্যায়ে তারা তরিকুলকে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমার কাছে কোনো জিনিস নেই। তরিকুলকে ধরার কারণ জানতে চাইলে পুলিশ জানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু রাতে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। আমার স্বামী শ্বাসকষ্টের রোগে আক্রান্ত। পুলিশ তাকে চোখ বেঁধে নির্মম নির্যাতন চালায়। সকালে তাকে খাবার দিতে গেলে পুলিশ তাকে খাবার দিতে দেয়নি। বরং আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে। পরে জানতে পারলাম তাকে ট্রিপল মার্ডারে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
নাসিমা আক্তার আরও বলেন, “এক সময় আমার স্বামী নেশা করত। কিন্তু বর্তমানে সে কোনো নেশা করে না। এমনকি বাড়ি থেকেও বের হন না। আমার স্বামী নির্দোষ। আমি তার মুক্তি চাই। যারা আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে তাদের বিচার চাই।”
খুলনা গেজেট/এনএম

