নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা-সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে ১৪ বছর আগে আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিলেন। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত আপিল ও এ-সংক্রান্ত আবেদনের ওপর আজ বৃহস্পতিবার রায় দেবেন সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় এটি ঘোষণার জন্য ১ নম্বরে রাখা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি শেষে ১১ নভেম্বর এ দিন ধার্য রাখেন। গত ২১ অক্টোবর থেকে আপিলের শুনানি শুরু হয়ে ওই দিন পর্যন্ত ১০ কার্যদিবস শেষ হয়।
আদালতে শুনানিকালে আগামী নির্বাচন নয়, তার পরের নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন চান রাষ্ট্রপক্ষ এবং বিএনপি-জামায়াতসহ অপরাপর আবেদনকারীরা। আপিলের শুনানিতে তারা ২০১১ সালের রায় পুনর্বিবেচনা করে বাতিলের আবেদন করে বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হোক, যেন দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়।
আদালতে এ-সংক্রান্ত রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, ইন্টারভেনর হিসেবে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ২১ অক্টোবর থেকে আপিলের শুনানি শুরু হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন। ফলে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বাতিল হয়ে যায়। ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের অক্টোবরে একটি আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে অক্টোবরে আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ ছাড়া নওগাঁর রাণীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন। পৃথক চারটি আবেদনের ওপর শুনানি শেষে নতুন করে আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।
খুলনা গেজেট/এইচ

