দীর্ঘ ২২ বছর পর ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খানজাহান আলী থানাধীন ঐতিহ্যবাহী শিরোমণি বাজার বণিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠাতব্য এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। বাজার এলাকার খুলনা-যশোর-মহাসড়কের দু’পাশে এবং বাজারের অলিগলি সর্বত্র ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের রং-বেরঙের প্যানা, পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে। প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্বাচনি প্রচারণায়। সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের আশীর্বাদ এবং দোয়া নিচ্ছেন। ২৫ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে খানজাহান আলী আদর্শ মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার সংখ্যা এক হাজার ২৬৬ জন। নির্বাচনে ১১ টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ৩৩ জন হলেও মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদের চার প্রার্থী। বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই হবে দ্বিমুখী।
এদিকে সভাপতি প্রার্থী হাফেজ আমিনুল ইসলাম (চেয়ার), শেখ রেজাউল ইসলাম (তালা) এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোল্লা সোলায়মান (হরিণ) ও শেখ সাহিদুল ইসলাম (গরুর গাড়ী) বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সভাপতি প্রার্থী হাফেজ আমিনুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, “নির্বাচনগুলোতে আমরা দেখে আসছি যে সর্বনি¤œ ভোট পাই, সেও বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী থাকে। আমি বাস্তববাদী লোক, সবার কাছে যাচ্ছি, তারা যে আশ্বাস দিচ্ছে, তাতে তো অনেক ভোটে বিজয়ী হতে হয়। বাকী আল্লাহর ইচ্ছা। গত এক বছর ধরে এডহক কমিটিতে আছি। কাউকে অত্যাচার করিনি, চাঁদাবাজি করিনি, অনৈতিক কোন কাজ করিনি। এ কারণে শতভাগ আশাবাদী ভোটাররা আমার পক্ষেই থাকবে।”
আমিনুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ রেজাউল হক বলেন, “আমি বিজয়ের ব্যাপারে ৯০ শতাংশ আশাবাদী। কারণ বাজারের ভোটাররা আমার পক্ষে রয়েছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার ৬ মাস আগে থেকেই প্রচারণা শুরু করেছি। আমাকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে ভোটাররা আশ্বস্ত করেছেন। বিজয়ী হব ইনশাআল্লা।”
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোল্লা সোলায়মান বলেন, “বিজয়ের ব্যাপারে ইনশাল্লাহ আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীদের সুখ-দুঃখের সাথী হিসেবে রয়েছি। গত এক বছর ধরে এডহক কমিটিতে রয়েছি। এ সময়ের মধ্যে বাজারের দীর্ঘদিনের অনিয়মগুলো দূর করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি। দীর্ঘ ২২ বছর নির্বাচন না দিয়ে অবৈধভাবে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের দোসরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। বাজারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা রেখেছি। যে কারণে সবাই আমাকে ভোট দিতে জোট বেঁধেছে।”
সোলায়মান হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ সাহিদুল ইসলাম বলেন, “বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। দীর্ঘ এক যুগ আমি বাজারের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ব্যবসায়ীদের সুখ-দুঃখ, বিপদ আপাদের সাথী ছিলাম। কারোর সাথে কখনও দুর্ব্যবহার করি নাই। আমার আত্মবিশ্বাস তারা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।”
জানা গেছে, ‘সর্বশেষ বাজার কমিটির সভাপতি ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত শেখ আকতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শেখ ওমর ফারুক। দু’জনই ছিলেন অনির্বাচিত। বাজার কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস বলেন, “আশা করি দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। দলমত নির্বিশেষে সকল ভোটার ভোট দিতে পারবে। নির্বাচিতরা বাজারের উন্নয়নসহ ব্যবসায়ীদের নিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বাজার পরিচালনা করবেন।’
খুলনা গেজেট/এনএম

