মঙ্গলবার । ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ । ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অভূতপূর্ব : প্রেস সচিব

গেজেট প্রতিবেদন

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, দেড় বছরে অন্তর্বর্তী সরকার যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে অভূতপূর্ব।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাসে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

তার মতে, মাত্র ১৫ মাসে বর্তমান প্রশাসন দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ সরকার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। যদিও সমালোচকদের কাছে এই সরকারকে কখনো দুর্বল, কখনো অদক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে—তবুও তিনি দাবি করেন, বাস্তবে সরকার প্রায় সব লক্ষ্য পূরণ করেছে।

শফিকুল আলম বলেন, নাম ছাড়া কাঠামোতে এই সরকার অনেকটাই এনজিও-ধাঁচের ও দুর্বল মনে হয়েছিল। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অদক্ষতা, ৫০০ দিনে ১ হাজার ৭০০টিরও বেশি বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, নতুন আইন পাসে জটিলতা এবং ছোট গোষ্ঠীর চাপে নতি স্বীকার করাকে কেন্দ্র করে অনেকেই সরকারকে ‘ভীতু’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।

তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রও এই সরকারের সঙ্গে শুল্ক–সম্পর্কিত পারস্পরিক চুক্তিতে এগোয়নি, ফলে সরকারকে সীমাবদ্ধ মনে হয়েছে।

সব সমালোচনার পরও শফিকুল আলমের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের জন্য বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন—

১. বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হওয়ায় দেশে স্থিতিশীলতা ফিরেছে।

২. কোনো লবিং ফার্ম ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত হয়েছে।

৩. ১৫ মাসে রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস হয়েছে, যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার উল্লেখযোগ্য।

৪. জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য নতুন পথরেখা তৈরি করেছে।

৫. সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করায় বিচারব্যবস্থা আরও স্বাধীন হয়েছে বলে দাবি।

৬. লালদিয়া টার্মিনালে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ—বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ।

৭. নতুন কূটনৈতিক নীতিমালা বাংলাদেশকে ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।

৮. অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে—ব্যাংক লুটপাট কমেছে, টাকা স্থিতিশীল, খাদ্যস্ফীতি ১৪% থেকে কমে ৭% এ।

৯. অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে।

১০. জোরপূর্বক গুম বন্ধ হয়েছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা নির্ভর রাজনীতি নিষ্ক্রিয় হয়েছে।

১১. সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরে এসেছে বলে দাবি।

১২. র‍্যাব আইন মেনে কাজ করছে এবং গোয়েন্দা সংস্থার বিরোধী হয়রানি কমেছে; ১৬ মাসে কোনো সাজানো ক্রসফায়ারের অভিযোগ ওঠেনি।

তিনি আরও লিখেছেন, নতুন ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন দেশে নতুন জনমত তৈরি করেছে, যাকে তিনি ‘ফারুকী ইফেক্ট’ হিসেবে অভিহিত করেন।

শেষে শফিকুল আলম বলেন, “পেছনে তাকালে পরিষ্কার—এটি কয়েক দশকে বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকারগুলোর একটি।”

তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন