অনেক সময় অন্য রোগের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসার পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগী ডায়াবেটিসের বিষয়ে জানতে পারেন। যেমন- কিডনি জটিলতা, হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান এই রোগীরা।
ডায়াবেটিস টাইপ-১ এ রোগীর শরীরে হঠাৎ করে ইনসুলিন হরমোনের উৎপাদন হয় না। এর ফলে খুব দ্রুত সময়ে রোগের লক্ষণ প্রকাশ হয়। যেমন- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ওজন কমতে থাকা এবং শরীরে ইনফেকশন হওয়া, ক্লান্তি বা অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া এমন বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয় এই ধরনের ডায়াবেটিসে।
বাংলাদেশে ডায়াবেটিস টাইপ-২ এর রোগী প্রায় ৯৯ শতাংশ। এই টাইপের ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সাধারণত কোনো পূর্ব লক্ষণ থাকে না। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এক কোটি ৩৫ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, এই সংখ্যা দুই কোটির বেশি। রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশে ৬১ দশমিক পাঁচ শতাংশ রোগীই জানেন না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, ডায়াবেটিসের টাইপ-১ আর টাইপ-২ এর বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যে কারণে রোগীরা সহজে বুঝে উঠতে পারেন না। ডায়াবেটিস টাইপ-২ এ সহজে রোগীর শরীরে রোগের লক্ষণ দেখা দেয় না।
ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে কী সমস্যা দেখা দেবে?
চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক। এটি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং জটিলতার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘমেয়াদি ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক, অন্ধত্ব ও কিডনি অকার্যকরসহ শারীরিক নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে পারেন রোগী।
গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানজিনা হোসেন বলেন, অনেক সময় কিডনি জটিলতা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগী জানতে পারেন তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই কিডনি কেমন কাজ করছে, তা জানার জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষাই যথেষ্ট নয়।
তিনি বলেন, “বছরে এক বা দুবার প্রস্রাবের অ্যালবুমিনের উপস্থিতিও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এজন্য সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে মাইক্রোঅ্যালবুমিন বা অ্যালবুমিন ক্রিয়েটিনিন অনুপাত পরীক্ষা করা।”
একইসঙ্গে বছরে অন্তত দুইবার চোখের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রেটিনাসহ চোখ পরীক্ষা করা এবং ফ্যাটি লিভারের মাত্রা জানতে মাঝে-মধ্যে যকৃত পরীক্ষা করা উচিত বলেও মনে করেন ডা. তানজিনা হোসেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
খুলনা গেজেট/এনএম

