প্রতিনিয়ত অনাহার অবহেলায় পড়ে থাকেন কত শত লোক। বঞ্চিত থাকে মৌলিক অধিকার থেকে। অবহেলা আর অনিশ্চয়তায় যাপিত জীবন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৎপরতা তাদের শেষ ঠিকানা।
নগরীর গল্লামারি এলাকার লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের দক্ষিণ পাশের একটি গলির ভিতরে চোখে পড়ে আনুমানিক ৮০বছর এর ঊর্ধ্বে জহুরা বেগম। লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের দক্ষিণপাশের একটি গলির ভিতরে রাস্তায় গত শুক্রবার বিকেল ৫টার দিক থেকে তাকে দেখা যায়। পৃথিবী যেন তার কাছে অচেনা জগৎ। এলাকার সহৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তায় দিন চলছিল। অবশেষে আশ্রয় হল খুলনার নিরালায় অবস্থিত ‘সুখের নীড়’ নামক বৃদ্ধাশ্রমে।
ওই এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক ডেনিশ গোস্বামী বলেন, “আমরা সত্যিকার অর্থে মানবিক মানুষের যে পরিচয় দেওয়ার তা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।”
আরেক বাসিন্দা স্বাপন বলেন, “তাকে গলির ভিতরে ঘোরা-ঘুরি করতে দেখি, আমি যখন অফিস থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসি তখন দেখি সে রাস্তার মাঝে শুয়ে আছে। এলাকার অনেকে তাকে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করে, কিন্তু সে কিছুই খায় না। এ কারণে এলাকার লোকজন বলে এভাবে থাকলে সে অসুস্থ হয়ে পরবে। আপনি আইনি সহযোগিতা নেন। তখন আমি ৯৯৯ এ ফোন করি। পুলিশ আসার আগে সুখের নীড় বৃৃদ্ধাশ্রম থেকে লোক আসে। আমরা তাদের কাছে অসহায় বৃদ্ধাকে দিয়ে দেই। পরে সোনাডাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ আসলে আমরা তাদেরকে বলি সুখের নীড় বৃৃদ্ধাশ্রম থেকে লোক এসে তাকে নিয়ে গেছে।”
সুখের নীড় বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক তালহা যুবায়ের বলেন, “এই মা শুক্রবার দিন ওই রাস্তায় ছিল। ওই এলাকার একজন আমাকে ফোন করে। আমি ফোন পেয়ে সেই জায়গায় গিয়ে দেখি রাস্তার মাঝখানে বৃদ্ধ এক মা শুয়ে আছে। তার নাম জিজ্ঞাসা করলে সে বলেন জহুরা। বাড়ি কোথায় ? বলেন দক্ষিণে, এটুকুই শুধু বলতে পারে। তাকে আমরা বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে আসি। তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।”
তালহা আরও বলেন, “সেবার আলো বাংলাদেশের এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। নিঃস্বার্থভাবে সমাজের অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সেবা আমাদের লক্ষ্য। এর একটি অংশ সুখের নীড় বৃদ্ধাশ্রম। আমাদের যথেষ্ট জায়গা না থাকার কারণে আমরা অন্যদের আশ্রয় নিতে পারছি না। আমাদের স্বপ্ন আছে খুলনা শহরে এমন একদিন আসবে, যেদিন কোনো অসহায় লোক রাস্তার পাশে পড়ে থাকবে না।”
খুলনা গেজেট/এনএম

