রবিবার । ১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ । ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্দেশনা

হাঁপানি-স্থুলতা-ডায়াবেটিস থাকলে মিলবে না মার্কিন ভিসা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য ভিসা নিতে ইচ্ছুক বিদেশিদের দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে, তাদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্দেশনায় এমনটি বলা হয়েছে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় এবিসি নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন ভিসা পেতে ইচ্ছুক যাদের ডায়াবেটিস, স্থূলতা বা দীর্ঘমেয়াদি অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্দেশনার আওতায়।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক দপ্তরীয় নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তাদের জানায়, যেসব আবেদনকারী বয়স, স্বাস্থ্য বা অন্যান্য কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চাপ সৃষ্টির কারণ হতে পারেন, তারা “পাবলিক চার্জ” অর্থাৎ রাষ্ট্রের উপর সম্ভাব্য বোঝা হিসেবে বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন ভিসা আবেদনকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা মূলত সংক্রামক রোগ শনাক্তকরণ, টিকাদান রেকর্ড এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য মান যাচাইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু নতুন নির্দেশনা তালিকাকে আরও বিস্তৃত করেছে এবং ভিসা কর্মকর্তাদের হাতে স্বাস্থ্য-ভিত্তিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, স্নায়বিক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাকে দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার সম্ভাব্য ঝুঁকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি বিবেচনায় নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে স্থূলতাকেও, কারণ এটি উচ্চ রক্তচাপ, ঘুমের ব্যাধি এবং হাঁপানির মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর কি আজীবন চিকিৎসার ব্যয় বহন করার মতো আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে কিনা, সেটিও মূল্যায়ন করতে হবে। অর্থাৎ, তাদের চিকিৎসায় যদি রাষ্ট্রীয় সহায়তা বা দীর্ঘমেয়াদি সরকারি ব্যয় জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেয়া যেতে পারে।

এছাড়া আবেদনকারীর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতিও বিবেচনায় নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে, যেমন শিশু বা প্রবীণ সদস্যদের দীর্ঘমেয়াদি সেবার প্রয়োজন থাকলে তা আবেদনকারীর কর্মসংস্থান সক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কনস্যুলার কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যক্তিগত অনুমান বা পক্ষপাতিত্বের ওপর নির্ভর করতে পারেন, যদিও তারা চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষিত নন। অভিবাসন আইনজীবীদের মতে, এই সিদ্ধান্ত অনেক আবেদনকারীর জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ বিশ্বজুড়ে খুবই সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা।

ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন সীমিত করতে কড়াকড়ি পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান, নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশের শরণার্থী নিষেধাজ্ঞা এবং অভিবাসী গ্রহণের সংখ্যা কমানো। নতুন স্বাস্থ্যভিত্তিক নির্দেশনা সেই কঠোর নীতির আরও বিস্তৃত রূপ বলে মনে করা হচ্ছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন