বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশে ফিরবেন বলে আশা করছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ‘না’ ভোটে সম্মতি জানিয়ে তিনি জানান, চলতি মাসেই ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেবে বিএনপি। সালাউদ্দিন বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও (সংশোধন) অধ্যাদেশের যে খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে বিএনপির।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এই খসড়ায় পরিবর্তন আনতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে তারা চিঠি দেবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
সালাউদ্দিনের বক্তব্য মতে, জোটের প্রার্থীকে নিজ দলের
প্রতীকে ভোটসহ আরপিও’র খসড়ায় কিছুটা আপত্তি, সরকার গঠনে শরিকদেরও যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া, এনসিপির সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা নিয়েও বিএনপি’র অবস্থান জানান।
তিনি বলেন, বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে যুক্ত হতে পারে অনেক ইসলামী দলও।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ আছে কি না- জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খুব শিগগিরই নির্ধারিত তারিখটি জানতে পারবেন। জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কোন কোন আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তো অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন, তিনি তো সেটা সাক্ষাৎকারে বলেই দিয়েছেন। আসন পরে নির্ধারিত হবে। বাংলাদেশের যে কোন আসন থেকে তিনি নির্বাচন করতে পারেন।
বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে কোন কোন আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা আশা করছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজের শারীরিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচন করবেন কি না। আমরা তো চাই তিনি নির্বাচনে অংশ নেন।
চলতি মাসেই ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেবে বিএনপি। যাতে তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করতে পারে। প্রত্যেক আসনেই একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। শরিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করে চূড়ান্ত মনোনয়ন নির্ধারণ হবে। যারা মনোনয়ন পাবেন না, তাদেরও অন্যভাবে মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া যাতে কেউ নির্বাচনে জিততে না পারে, সে নিশ্চয়তা দিতে একক প্রার্থী থাকা আসনে ‘না’ ভোটে সম্মতি জানিয়েছে দলটি।
আরপিও সংশোধনের বেশ কিছু ধারায় বিএনপি সম্মত ছিল জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তবে ২০(১) উপধারা অনুযায়ী জোটভুক্ত হলে রাজনৈতিক দলগুলো অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারতো- এই ধারার পরিবর্তনে অধিকাংশ দলই একমত ছিল। আমরা আশ্বস্ত ছিলাম, কিš যেভাবে আরপিও পাস হলো, তাতে ছোট দলগুলো জোটবদ্ধ হতে উৎসাহিত হবে না। এতে ছোট দলের বড় নেতারা সুযোগ হারাবেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এটি একতরফা কেন পাস করা হলো? বিএনপি বহুদলীয় ও সমৃদ্ধ সংসদ দেখতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শরিক ও গণতন্ত্রপন্থী অন্যান্য শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়ন কাজ করবে বিএনপি। জোট ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও শরিকদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনাও আছে।
জোট রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব দলের সঙ্গেই আলোচনা চলছে। এনসিপির সঙ্গেও যোগাযোগ আছে। তবে এখনই জোট গঠনের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না, আলোচনা চলছে।
খুলনা গেজেট/এনএম

