বুধবার । ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২০শে কার্তিক, ১৪৩২
কক্ষে কাদের যাতায়াত ছিল?

তিন মাসেও পরিচয় মেলেনি হোটেল ওয়েস্টার্ণ ইন থেকে উদ্ধার মৃত নারীর

সাগর জাহিদুল

তিন মাসের অধিক সময় পার হলেও খুলনায় হোটেল ওয়েস্টার্ণ ইন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত নারীর পরিচয় মেলাতে পারেনি পুলিশ। দেশের বিভিন্নস্থানে এ সম্পর্কিত তথ্য পাঠানো হলেও সেখান থেকে কোনো জবাব আসেনি খুলনা থানায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোটেলের ওই কক্ষে মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া জন্ম নিবন্ধন এবং প্রত্যয়নপত্রের তথ্যেও ছিল ভুল। অপমৃত্যু মামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে ওই নারীর মামলার তদন্তের পরিধি। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় পুলিশের তদন্তও চলছে ঢিলেঢালাভাবে। এই মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে পুলিশের আগ্রহ নেই বললেই চলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খুলনা থানার এসআই পিংকি বলেন, “ওই নারী ৩ জুলাই ঢাকা থেকে খুলনার হোটেল ওয়েস্টার্ণ ইন হোটেলের ২০৮ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেন। পরেরদিন সকালে তিনি সেখানে নাস্তা এবং ওয়ার্ড বয় দিয়ে ঘরটি পরিষ্কার করিয়ে নেন। বিকেল ৪টার দিকে কক্ষটি থেকে ওই মহিলার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।”

তিনি আরও জানান, “ওই নারীর কাছ থেকে একটি জন্ম সনদ এবং একটি প্রত্যয়নপত্র উদ্ধার করা হয়। সেখানে তার নাম লেখা ছিল শান্তা ইসলাম। জন্ম সনদে মোরেলগঞ্জের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছিল। সে ঠিকানা অনুযায়ি মোরেলগঞ্জ থানার তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে এসেছে। কিন্তু মোরেলগঞ্জ থানার প্রতিবেদনে ওই ঠিকানায় ওই নামে কেউ থাকে না বলে জানানো হয়। প্রত্যয়নপত্র খুলনা সিটি করপোরেশন ৯ নং ওয়ার্ড থেকে ২০০৯ সালে নেওয়া। সেখানে খোঁজ নিয়েও তার পরিচয় মেলাতে পারেনি খুলনা থানা পুলিশ।”

তিনি আরও বলেন, “শেফালী নামে এক মহিলা মৃত ওই নারীকে ঢাকায় গৃহপরিচারিকার কাজ দেন। তার সাথে ফোনে কথা বলে জানা গেছে মৃত ওই নারীর নাম শান্তা। সে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। সারাদেশে বেতার বার্তা পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে পরিচয় বের করার যন্ত্র একমাত্র পিবিআই এবং সিআইডি’র রয়েছে। আমাদের কাছে সে যন্ত্র নেই। তারা যদি ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে আমাদের আর কিছু করার থাকবে না।”

সিআইডি ক্রাইম সিনের এসআই প্রান্তষ গাতিদার বলেন, “আমাদের কাজ হল আলামত সংগ্রহ করে পুলিশকে দেওয়া। সার্ভারে হাতের রিজ ম্যাচ না হওয়ায় তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।”
একাধিক সূত্র জানায়, ‘ওই মহিলা খুলনার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতো। কয়েকদিন থেকে ভাড়া না দিয়েই কেটে পড়তো। হোটেল ওয়েস্টার্ণ ইন-এ তার মৃত্যু রহস্যজনক। ওই হোটেল ঘিরে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সার্বক্ষণিক যাতায়াত থাকায় রহস্য আরো ঘনীভূত হচ্ছে। ওই মহিলার কক্ষে কাদের যাতায়াত ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।’

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন