ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে বিএনপি’র প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই আসনটিতে নতুন মুখ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় নেমেছেন খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এসএম শফিকুল আলম মনা। যদিও প্রচারণার প্রথম দিন তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার বার্তা মানুষের কাছে তুলে দিয়েছেন। গতকাল শনিবার আসনটিতে নিজের প্রার্থী হওয়ার কারণ, প্রার্থী মনোনয়নে দলীয় নির্দেশনা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তিনি তুলে ধরেন খুলনা গেজেটের কাছে।
তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, “আমি আমার দলের প্রতি, জিয়া পরিবারের প্রতি সবসময় অনুগত। কখনোই জিয়া পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। শহীদ জিয়ার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছি। শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে সহযোগী সংগঠন যুবদল করতাম। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে মূল দলে আসছি। আমি বিশ্বাস করি দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই চূড়ান্ত। যদি আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান মনে করেন আমাকে কোন জায়গায় নির্বাচন করতে দেবেন, আমি করবো। আর যদি না দেন তাহলে অন্য কোন লোকের মতো বিদ্রোহ করা আমি মনে করি না কখনোই সমীচীন হবে”।
তিনি বলেন, “আমি দলের হাই কমান্ডের প্রতি, তারেক রহমানের প্রতি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শতভাগ অনুগত। আমি বিশ্বাস করি ওনারা যা কিছু করবেন দলের স্বার্থে করবেন। আমি নির্বাচন করতে চাই এই বিষয়টা যদি তাদের না জানাই, মানুষের কাছে যদি না প্রকাশ করি তাহলে ভবিষ্যতে কোন নির্বাচনে আমি দাঁড়াতে পারবো না। আমি মাঠে নেমেছি আমি একজন প্রার্থী হিসেবে। তবে দলের সিদ্ধান্তই মেনে নেব। আমাকে দল না দিলেও কোন কথা বলবো না, প্রতিবাদও করবো না। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই জনমত গড়ে তুলবো”।
শফিকুল আলম মনা বলেন, “প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি সম্পূর্ণ হাইকমান্ডের। যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রার্থী ফাইনাল না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না কে মনোনয়ন পাচ্ছে। তবে আমাকে নেতাকর্মীরা এখানে (খুলনা-২ আসনে) প্রার্থী হতে বলেছে। এ কারণেই আমি এখানে প্রার্থী হয়েছি। দলের হাইকমান্ড জনপ্রিয়তা, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি একমত”।
তিনি বলেন, “আমি যখন প্রচারে নেমেছি হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। এত মানুষ হবে এটা চিন্তাও করিনি। যত দিন যাবে মানুষ বাড়বে। মানুষ আসছে, তাদের আস্থা, বিশ্বাস সংকটের জায়গা থেকে মানুষ মনে করে কাদেরকে দায়িত্ব দিলে খুলনা ভালো হবে। এই আস্থা রেখেই তারা মাঠে নেমেছে”।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, “খুলনা-২ আসন হচ্ছে সারা বিভাগের প্রাণকেন্দ্র। এখানে কিন্তু অনেক সমস্যা, এখানে জলাবদ্ধতা, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা মানুষ পায় না। রূপসা শিল্পাঞ্চল কিন্তু ধ্বংস হয়ে গেছে। দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি দীর্ঘকাল বন্ধ, শ্রমিক এখনো তাদের বেতন ঠিকমতো পায়নি”।
খালিশপুর শিল্পাঞ্চল বিষয়ে তিনি বলেন, “বিজেএমসির পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলের শিল্পকলকারখানা গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক সময় নদীর পাড়ে শিল্পকলকারখানা গড়ে উঠেছিল। খুলনার গৌরব ফিরিয়ে আনতে গেলে, শিল্পনগরী হিসেবে আবার ফিরিয়ে আনতে হলে সকলকে মিলে কাজ করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে খালিশপুরের জুট মিলগুলোকে চালু করা সম্ভব।
তিনি বলেন, খালিশপুর অঞ্চলে কোন শ্রমিক যদি গুরুতর আহত হয় তাহলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে আসতে সে কিন্তু মারা যাবে। ওই অঞ্চলে গত ১৭ বছরে হাসপাতাল করার কোন ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত হয়নি। ওই অঞ্চলে রকিবুল ইসলাম বকুল নির্বাচিত হলে সবচেয়ে বড় হাসপাতাল গড়ে তুলবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। যদি আগামীতে আমাদের দল নির্বাচিত হয় তাহলে খুলনার মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান সহ মৌলিক চাহিদার বিষয়গুলো আমরা জোর দিতে পারবো”।
খুলনা গেজেট/এনএম

