বিএনপি-জামায়াত বলয়ের বাইরে ভোটের মাঠে নামছে নতুন জোট। এর নেতৃত্বে থাকছে গণ-অভ্যুত্থানের গর্ভে গড়ে ওঠা নতুন দল এনসিপি। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জরিপের পর জনমত বাড়াতে নতুন দল এই উদ্যোগ নিয়েছে। লক্ষ্য থাকছে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ৬৯, ৯০ এবং ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন। ফ্যাসিস্টদের বিচার ও চাঁদাবাজদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর নানা আলোচনায় এসেছে এর নেতৃত্বদানকারী ছাত্ররা। ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্যে তারা দল গঠন করেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনসমর্থন বাড়াতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভিশন কন্সাল্টিং এক জরিপ তথ্য প্রকাশ করেছে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা এক রিপোর্ট প্রকাশ করে। নাগরিকদের প্লাটফর্ম ভয়েস ফর বিফর্ম ও বিআরএআইআইএন ফলাফল প্রকাশ ও জরিপে সহযোগিতা করে। সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে তারা দশ হাজার ভোটারের ওপর জরিপ চালায়। এ জরিপে ৪. ১০ শতাংশ ভোটার এনসিপিকে পছন্দ করেছে। অধিকাংশ ভোটার বলেছেন নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত। সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অনুষ্ঠানে বলেছেন এ মাসেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি রায় হবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ রয়েছে। ইসির তালিকায় নৌকা প্রতীকও নেই। ফলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এখনও নিশ্চিত নয়। আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ভোটের রায় এ মুহূর্তে অনুমান করা যাচ্ছে না অন্য সূত্রের দাবি।
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে এ জোটের রাজনীতিকরা অনেক অঙ্ক কষেছেন। এ অংশের ধারণা এর প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে না। একটি সূত্রের দাবি এ অবস্থায় ছাত্রদের নতুন দল আরেকটি বলয় তৈরি করেছে। এ বলয়ের মধ্যে রয়েছে এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। ইতোমধ্যেই নতুন দলের মধ্যে থেকেই এ নিয়ে নানা তৎপরতা শুরু হয়েছে।
নির্বাচনি মাঠে সমঝোতার প্রাক প্রস্তুতি হিসেবে নাগরিক ঐক্য শাপলা প্রতীক নেবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দলের প্রধান মাহমুদুর রহমান মান্না এক অনুষ্ঠানে বলেছেন শাপলা অন্য দলকে দিলে তারা আদালতে যাবেন না। ঐক্যের প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে নতুন দলের সংগঠকরা তোপখানা রোডে দলীয় কার্যালয়ে সাবেক ছাত্রনেতা মান্নার সাথে সাক্ষাৎ করেন। শাপলা প্রতীক না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তাকে অভিনন্দন জানান।
তিনি এ অনুষ্ঠানে বলেন বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে তারা অনেক ছাড় দিতে প্রস্তুত। যে-কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি। তবে নতুন জোটের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “যারা ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ৬৯, ৯০ এবং ২৪ এর চেতনায় বিশ্বাসী শুধুমাত্র তাদের সাথেই ঐক্য হবে। তবে নতুন জোটের নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ মাসেই সব কিছু স্পষ্ট হবে।”
খুলনা গেজেট/এনএম

