এখনও এগিয়ে চলেছে গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একমাত্র নৌযান ‘ম্যারিনেট’। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ভোর নাগাদ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানটি সুমুদ ফ্লোটিলার সর্বশেষ সক্রিয় জাহাজ, যা শুরুতে ছিল মোট ৪৪টি নৌযানের বহর। নৌযানটিতে (ইয়ট) রয়েছেন ছয়জনের একটি দল। খবর আল জাজিরার।
বৃহস্পতিবার রাতে আয়োজকদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন ইয়টটির অস্ট্রেলীয় ক্যাপ্টেন। তিনি নিজেকে শুধুমাত্র ‘ক্যামেরন’ নামে পরিচয় দেন। তিনি জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অভিযাত্রার শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও এখন তারা পূর্ণগতিতে গাজামুখী যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন।
‘আমাদের সঙ্গে আছেন কয়েকজন দুর্ধর্ষ তুর্কি, ওমান থেকে যোগ দেয়া এক নারী অভিযাত্রী এবং আমি নিজে। আমরা শুধু দিক ধরে এগিয়ে যাচ্ছি,’ বলেন ক্যাপ্টেন।
ভোর ৪টার দিকে লাইভ ভিডিও ফিডে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক জলসীমায় গাজার সূর্যোদয়ের পটভূমিতে ক্রুরা জাহাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জিও-ট্র্যাকার অনুযায়ী, তখন তারা গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরে রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, ‘ম্যারিনেট’ অবরোধ ভাঙতে পারবে না এবং গাজার যুদ্ধক্ষেত্রে যানটিকে ঢুকতে দেয়া হবে না।
বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে ইসরায়েলি বাহিনী একে একে মানবিক সরঞ্জামবাহী ছোট-বড় নৌযানগুলো আটক করে। ইতিমধ্যেই ৪০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা প্রায় ৫০০ অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে আছেন সুপরিচিত জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, বার্সেলোনার সাবেক মেয়র আডা কলাউ এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান।
এই বিশাল নৌ-অভিযান গোটা বিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং নৌযানগুলো আটকের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের (আইটিএফ) মহাসচিব স্টিফেন কটন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জলসীমায় ত্রাণবাহী শান্তিপূর্ণ মানবিক জাহাজে হামলা বা জব্দ করা আন্তর্জাতিক আইনে বেআইনি।
রাষ্ট্রগুলো ইচ্ছেমতো আইন মানতে বা ভাঙতে পারে না। সমুদ্রকে যুদ্ধক্ষেত্র বানানো উচিত নয়,’ মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলের এমন ন্যক্কারজনক পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে দেশটির কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন। জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন, গ্রিস ও আয়ারল্যান্ডসহ একাধিক ইউরোপীয় দেশও আটক কর্মীদের মুক্তি দাবি করেছে।
তবে জাতিসংঘ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ফিলিস্তিনবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সরাসরি ‘অবৈধ অপহরণ’ বলে আখ্যা দেন।
তিনি এক্স-এ লিখেছেন ,‘আমার মন পড়ে আছে গাজার মানুষের সঙ্গে, যারা ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ এবং গণহত্যায় বন্দী হয়ে গেছেন।’
খুলনা গেজেট/এএজে