বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বাকবিতণ্ডা ও সংঘর্ষে উভয় বিভাগের উপাচার্যসহ অন্তত ১৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ভোলা রোডে নবনির্মিত বিটাক ভবনের কাছে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ৩ জনকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১২ ব্যাচের একদল শিক্ষার্থী নবনির্মিত বিটাক ভবনের মাঠে মার্কেটিং বিভাগের ১০ম ব্যাচের এক সিনিয়র শিক্ষার্থীর সাথে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে প্রথমে বাকবিতন্ড জড়ায়। এসময় ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মার্কেটিং বিভাগের ঐ সিনিয়রকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে। সিনিয়র বিষয়টি তাদের ব্যাচের গ্রুপে জানালে কয়েকজন বিষয়টি জানতে মাঠে গেলে তাদেরকেও মারা হয়। ঘটনাস্থলে মার্কেটিং বিভাগের তিন শিক্ষার্থী আহত হয়।
জানা যায়, বিকাল সাড়ে ৫টায় ঘটনার সূত্রপাত ঘটলেও দুপক্ষের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি শান্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার মদদে একপক্ষ আরেক পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার পর মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হতে শুরু করে। অন্যদিকে, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিটাক ভবনের কাছে একত্রিত হয়। পরে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিটাক ভবনের দিকে গেলে দুই দলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষের ফলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় তাকেও ইটপাটকেলের আঘাত আঘাত লাগে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সহকারী প্রক্টর আলমগির হোসেন এবং প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল দুই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত মার্কেটিং বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, আমরা গ্রুপে একটা মেসেজ দেখে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি আমার ফয়সালকে মারধর করছে। এসময় ছাড়াতে গেলে আমাকেও ঘিরে ধরে। পরে আমি জুতা রেখে সেখান থেকে দৌড়ে দিয়ে চলে আসি।
একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা মিমাংসায় বসার জন্য প্রস্তুত। তবে এ ঘটনায় তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, উভয় পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তারা দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের শান্ত করেছেন এবং আগামীকাল তাদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন। তবে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির উদাসীনতাকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে