ভোলা থেকে পাইপ লাইনে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা পর্যন্ত গ্যাস পাইপ লাইন বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমন সংবাদে নাগরিক সংগঠনগুলো আন্দোলন করলেও খুব বেশি একটা কাজ হয়নি। আপাতত ভোলা-বরিশাল-খুলনা রুটে পাইপলাইন বসানো হচ্ছে না। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
পেট্রোবাংলা ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ভোলার গ্যাস কূপ থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন লাইন বসানোর জন্য গত মার্চ মাসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন লাইন বসানোর কথা ছিল। কিন্তু আপাতত ভোলা-খুলনা রুটে পাইপলাইন বসানো হবে না। পরবর্তীতে এই রুটে পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেট্রোবাংলা।
এর ফলে ভোলা থেকে খুলনায় কবে গ্যাস আসবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন খুলনার মানুষ। যা এ অঞ্চলের বিনিয়োগ ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অন্যদিকে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন বসানো হয়। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) এর এই কাজে ব্যয় হয় ৩৭১ কোটি টাকা। পরবর্তীতে খুলনাসহ দক্ষিণের ২১ জেলায় গ্যাস সরবরাহের জন্য ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি গড়ে তোলা হয়। কিন্তু তখন থেকে এ পর্যন্ত খুলনায় গ্যাস আসেনি।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, “গ্যাস সরবরাহের দাবিতে খুলনার মানুষ এক দশক ধরে আন্দোলন করছে। কিন্তু এখনও গ্যাস আসেনি। ভোলা-খুলনা রুটে কবে পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হবে, আর কবে গ্যাস আসবে তা অনিশ্চিত। গ্যাস সরবরাহ না থাকায় খুলনার শিল্প কারখানাগুলো অন্য অঞ্চলের শিল্প কারখানার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। খুলনায় নতুন শিল্প কারখানাও গড়ে উঠছে না।”
তিনি বলেন, “ভোলা থেকে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ না করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এপ্রিল মাসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।”
এ ব্যাপারে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “প্রথম ধাপে ভোলা-বরিশাল-ঢাকা রুটে গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন স্থাপন হবে। পরবর্তী ধাপে হবে খুলনা রুটে। তবে খুলনা রুটে কবে থেকে হবে তা জানা নেই। ভোলা থেকে গ্যাস এলে তখন খুলনার ২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দেওয়া সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন, “বিসিকের ২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেজন্য পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে।” ওই দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনায় গ্যাস আসার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি গ্যাস আসে তাহলে দেয়া সম্ভব হবে। আর যদি না আসে তাহলে সম্ভব হবে না।”
খুলনা গেজেট/এনএম