নগরীর দৌলতপুর রেলিগেটস্থ বন্ধ হেলাল জুট প্রেস লিঃ এর ৫ শ্রমিক নেতা দু’লাখ টাকা গ্রহণ করে বালির বেড চালু করে। প্রতিবাদে বঞ্চিত ৩’শ শ্রমিক বালি সরবরাহ পাইপ উঠিয়ে দিয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছেন সকল কার্যক্রম। করেছেন প্রতিবাদ। ফুলে উঠেছে শ্রমিক সমাজ। গেল ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ মিলটি। মিলটির কমপক্ষে সাড়ে ৩’শ শ্রমিক বেকার।
ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত হেলাল জুট প্রেস লিঃ। প্রেসটি দীর্ঘদিন বন্ধ। সাড়ে ৩ শ’ শ্রমিক বেকার। কেউ চালাচ্ছে রিক্সা, কেউ ইজিবাইক, কেউ দিয়েছে চায়ের দোকান, কেউ অন্য প্রতিষ্ঠানে করছেন শ্রমিকের কাজ। সম্প্রতি ওই মিলের মধ্যে জসিম উদ্দীন ও সুজন নামে দু’ব্যক্তি বালির বেড তৈরি করেছে। প্রেসটি ব্যবহারের জন্য ৫ শ্রমিক নেতাকে দিয়েছেন ২ লাখ টাকা। মাসে ৫০ হাজার টাকা ভাড়া চুক্তিতে এ বেড নির্মাণ করা হয়েছে।
দু’লাখ টাকা গ্রহণকারী পাঁচ শ্রমিক নেতা হচ্ছেন, কালাম হাওলাদার, শিপন হাওলাদার, মিজান মুন্সী, বেলাল মুন্সী ও মিলন শেখ। এ টাকা কয়েকজনের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করা হয়। সম্প্রতি ভৈরব নদে নোঙর করে ওই বেডে বালি উত্তোলন শুরু করা হয়। গত শুক্রবার বঞ্চিত বৃহৎ শ্রমিক সমাজ সকাল আনুমানিক ১১ টায় যেয়ে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। পরে গত সোমবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে আলোচনায় বসে উভয় পক্ষ। সেখানে অর্থ গ্রহণকারীর অনেকেই হাজির হয়নি। এ নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয় এবং শ্রমিকরা কতিপয় নেতার এ কর্মকাণ্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
ওই প্রেসটির কলোনির সাধারণ সম্পাদক শিপন হাওলাদার বলেন, “শ্রমিকদের কথা চিন্তা করেই বালির বেড চালু করা হয়। দু’লাখ টাকা নিয়ে প্রায় ৫০ জন শ্রমিকের মধ্যে দেওয়া হয়েছে।” সকলে অর্থ না পাওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, “অর্থ গ্রহণকারী অনেকেই এখন বিদ্রোহ করছে।”
শ্রমিক নেতা বাসিত তালুকদার বলেন, ৫ শ্রমিক নেতা টাকা নিয়ে অন্যান্যদের না দেওয়ায় সকলে মিলে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কলোনী সভাপতি কালাম তালুকদার অর্থ নেওয়ার কথাটি স্বীকার করে বলেন, অধিকাংশ শ্রমিককে পাঁচশ’ বা এক হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। শ্রমিক নেতার অনেক কে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
বেডটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ব্যক্তি মালিকানাধীন ওই কোম্পানির সাথে স্ট্যাম্পে চুক্তি করা হয়েছে।” সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু দৌলতপুর থানা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক কতিপয় শ্রমিক নিয়ে পরিবেশ ঘোলাটে করেছে।
দৌলতপুর থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদিউজ্জামান বলেন, “অর্থ গ্রহণের কথা নিজেরাই স্বীকার করেছে। অধিকাংশ শ্রমিক ওই অর্থ পাইনি।”
আমি শ্রমিকদের প্রতিনিধি। কোনো অনিয়ম হলে আমাকেই দেখতে হবে উল্লেখ করে বলেন, “কলোনীর সভাপতি ও সম্পাদকসহ পাঁচ জনে দু’লাখ টাকা নিয়েছে তারা সেটা বলছে। মাসিক কত টাকা চুক্তি সেটাও প্রকাশ্যে বলেছে।”
শ্রমিকরা বঞ্চিত হয়েছে যে কারণে বেডটি বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে কাজ করছি।
বালি বেড পরিচালনাকারী মোঃ সুজন বলেন, “শ্রমিকদের মধ্যে গ্রুপিং হয়েছে।”
যে কারণে বন্ধ রয়েছে বালির বেড দাবি করে বলেন, “আজ-কালের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।”
খুলনা গেজেট/এনএম