Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
শুক্রবার । ২২শে আগস্ট, ২০২৫ । ৭ই ভাদ্র, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

স্টেট ডিপার্টমেন্টের ইসরাইল-ফিলিস্তিন বিষয়ক মুখপাত্র বরখাস্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসরাইল-ফিলিস্তিন বিষয়ক ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতির সাথে দ্বিমত পোষণ করায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল তাদের শীর্ষ ইসরাইল-ফিলিস্তিন বিষয়ক মুখপাত্র শাহেদ গোরেশিকে বরখাস্ত করেছে। তিনি ব্যুরো অফ নিয়ার-ইস্ট এফেয়ার্সের সিনিয়র প্রেস অফিসার ছিলেন। ইসরাইল-ফিলিস্তিন বিষয়ক ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিকে কীভাবে উপস্থাপন করা হবে তা নিয়ে বিরোধের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার ও অভ্যন্তরীণ নথির পর্যালোচনা করে দেখা গেছে বিতর্কিত নীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল গাজা উপত্যকা থেকে কয়েক লক্ষ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেয়া বিষয়ে প্রশাসনের পরিকল্পনা। মুখপাত্র শাহেদ গোরেশি’র লেখা এ সংক্রান্ত একটি প্রেস বিবৃতি নিয়ে তীব্র আলোচনার কয়েকদিন পর গতকাল এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তার খসড়া বিবৃতিতে মুখপাত্র শাহেদ গোরেশি লেখেন, “আমরা গাজার ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদকে সমর্থন করি না।” এ সংক্রান্ত একটি মেমো’র বরাতে জানা গেছে যে, পররাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ নেতৃত্ব কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে উক্ত লাইনটি বাদ দিতে এবং লিখেছে, “লাল দাগ চিহ্নিত লাইনটি কেটে ফেলুন এবং পরিষ্কার করুন।”

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র টমাস পিগোট সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমরা ফাঁস হওয়া ইমেইল বা অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করি না। ফেডারেল কর্মচারীদের কখনোই তাদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শকে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের এজেন্ডার উপরে রাখা উচিত নয়।”

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই বরখাস্তের মাধ্যমে কর্মচারীদের স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে যে, কড়া প্রো-ইসরাইল অবস্থান থেকে সামান্য বিচ্যুতিও সহ্য করা হবে না—এমনকি যদি তা দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হয়।

শাহেদ গোরেশি বলেন, তাকে বরখাস্তের কোনো কারণ জানানো হয়নি। যেহেতু তিনি একজন কনট্রাক্টর ছিলেন, তাই আইনতঃ পররাষ্ট্র দপ্তরের তা জানানোর বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি বলেন, “ভালো সুনাম এবং অনেক সহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার পরও আমি এসব বিরোধ থেকে বাঁচতে পারিনি।” তিনি যোগ করেন, এ ঘটনাটি গাজা থেকে সম্ভাব্য ফিলিস্তিনি উচ্ছেদ বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগজনক প্রশ্ন তুলছে।

জানা গেছে, গোরেশির বরখাস্তের আগে আরও কিছু মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল। ইসরাইল বিগত ১০ আগস্ট হামাস সদস্য ও আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরীফকে হত্যা করার পর মুখপাত্র শাহেদ গোরেশি সমবেদনা জানিয়ে একটি বার্তা প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দপ্তরের নেতৃত্ব তা আটকে দেয় এবং ইমেইলে জানায়: “কোনো প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা নিশ্চিত না হলে সমবেদনা জানানো যাবে না।”

এছাড়া গোরেশির আরো দ্বন্দ্ব হয়েছিল ডেভিড মিলস্টেইনের সঙ্গেও, যিনি ইসরাইলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবির উপদেষ্টা। মিলস্টেইনের এক মেমোতে সম্প্রতি ইসরাইল সফর করা নিয়ে স্পিকার মাইক জনসনকে প্রশংসা করা হয়েছিল এই বলে যে, তিনি “জুদিয়া ও সামারিয়া সফর করা প্রথম হাউস স্পিকার এবং এই সফরের মাধ্যমে স্পীকার ইতিহাস গড়লেন।” চূড়ান্ত বিবৃতিতে গোরেশি ওই লাইনটি মুছে দেন।

গোরেশি অস্বীকার করেন যে তার এই মতপার্থক্যগুলো ট্রাম্পবিরোধী কারণে হয়েছিল। বরং তিনি মে মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেয়া এক বক্তৃতার প্রশংসা করেন, যেখানে ট্রাম্প নব্য রক্ষণশীল এবং পশ্চিমা হস্তক্ষেপবাদীদের সমালোচনা করেছিলেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নতুন পথের আহ্বান জানিয়েছিলেন। গোরেশির ভাষায়, “পররাষ্ট্র দপ্তরের সপ্তম তলার বাজপাখিরা সেই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মেলে না।” সপ্তম তলায় রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস গত সপ্তাহে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। নতুন মুখপাত্রের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোক্সপার্সন টমাস পিগোট মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন