Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ২১শে আগস্ট, ২০২৫ । ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

পাথর লুটেরা ৫২ জনের নাম প্রকাশ

গেজেট ডেস্ক

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর লুটপাটের পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ও সুবিধাভোগী ৫২ জন প্রভাবশালীর নাম উঠে এসেছে দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে। সে তালিকায় বিএনপি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ, এনসিপির নেতাদেরও নাম রয়েছে। তালিকায় আছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিজিবির নামও।

দুদকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর এলাকা থেকে কয়েকশ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুবিধাভোগী হিসাবে খনিজ সম্পদ অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিগত ১ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করা ৪ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বিজিবির নাম উঠে এসেছে। সংস্থা ও প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও পাথর লুটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ, এনসিপিসহ ৪২ জন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার এনফোর্সমেন্ট বিভাগের নির্দেশে গত ১৩ আগস্ট সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথরে অভিযানে যায় দুদক সিলেটের সমন্বিত কার্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল। উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের দলটি অভিযান শেষে তাদের প্রতিবেদন পাঠায়।

বুধবার (২০ আগস্ট) সেটি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। দুদকের দল অভিযানকালে দেখতে পায়, স্থানীয় প্রশাসনের কিছু পর্যটন সেবা ও নদীর তীরেই বিজিবি ক্যাম্প টহল চালু অবস্থায় আলোচিত ওই পর্যটন স্পট থেকে বিগত কয়েক মাসে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ইন্ধন ও সরাসরি সম্পৃক্ততায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ এভাবে সরানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাথর আত্মসাতের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ও যোগসাজশ ছিল।

নদী ও পর্যটন এলাকা থেকে পাথর চুরি করে প্রথমে স্থানীয় স্টোন ক্রাশার মিলে জমা করা হয়। পরে তা ভাঙানো হয়, যাতে চুরি হওয়া পাথরের অস্তিত্ব পাওয়া না যায়। পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি না থাকলেও গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে, বিশেষ করে গত ৩ মাস ধরে পাথর উত্তোলন চলতে থাকে। পর্যটন এলাকাটি সংরক্ষিত পরিবেশ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও ১৫ দিন আগে থেকে নির্বিচারে পাথর উত্তোলন ও আত্মসাৎ হয়েছে। প্রায় ৮০ ভাগ পাথর তুলে এলাকায় অসংখ্য গর্ত ও বালুচরে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর অবহেলার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা, ২০১২-এর বিধি ৯১ ও ৯৩ অনুযায়ী খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকায় অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা এবং অবৈধভাবে খনিজ সম্পদ উত্তোলন বা আহরণ করা যাবে না। অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে শনাক্ত করে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা ও এ ধরনের কাজে লিপ্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা বা এখতিয়ার খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর (বিএমডি) ওপর ন্যস্ত। কিন্তু সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনা প্রতিরোধে বিএমডি থেকে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনারকে দায়ী করে বলা হয়, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী ৮ জুলাই তার কার্যালয়ে পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বলেন, সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে সিলেটে যাবে না কেন? এর সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িত। তার এ বক্তব্যটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে সাদাপাথর লুটপাটে ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছে। সরকারিভাবে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও তার এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে পাথর লুটপাটকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের অবৈধ স্বার্থরক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরদকে দায়ী করে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেট জেলায় অবস্থিত সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি ও উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃত। এ স্থান থেকে পাথর, বালু ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ উত্তোলন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। সরকারি বিধি অনুযায়ী বিদ্যমান পর্যটন স্পটগুলোর নান্দনিক সৌন্দর্য বজার রাখাসহ পরিবেশ সংরক্ষণে যথাযথ উদ্যোগ বা কার্যক্রম গ্রহণ করা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব। পাথর লুটপাট ঠেকাতে সিলেটে কর্মরত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সদিচ্ছার অভাব, অবহেলা, ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা স্পষ্ট। তিনি তার অধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে সাদাপাথর পর্যটন স্পট রক্ষায় সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সাদাপাথর পর্যটন স্পটের বর্তমান অবস্থা একদিনে হয়নি। এটি বিগত ৭-৮ মাস ধরে চললেও জেলা প্রশাসক ও তার অধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে চরম ব্যর্থ হয়েছেন।

সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ২৭ এপ্রিল অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধের জন্য পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নির্দেশ দিলেও সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আলোচ্য সাদা পাথর লুটপাটের বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে বর্তমানে কর্মরত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চারজন ইউএনওকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাথরকাণ্ডের জন্য দায়ী করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত এক বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ করে সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় দৃশ্যমানভাবে দিনদুপুরে উপজেলা প্রশাসনের গোচরেই উক্ত পাথর লুটপাট হয়েছে। ওই সময়ে কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে আজিজুন্নাহার, মোহাম্মদ আবুল হাছনাত, ঊর্মি রায় ও আবিদা সুলতানা কর্মরত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা নামমাত্র ও লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া পাথর লুট বন্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনিসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের কমিশন গ্রহণ করে সাদাপাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর প্রতি ট্রাকে প্রায় ৫০০ ঘনফুট করে লোড করা হয়। পরিবহণ ভাড়া ছাড়া প্রতি ট্রাকের পাথরের দাম ধরা হয় ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য আলাদা করা হয়। বাকি ৮১ হাজার টাকা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীরা নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নেয়। এ ছাড়া প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং উপজেলা প্রশাসনের জন্য ৫ হাজার টাকা বণ্টন হতো। এ ছাড়া অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি বারকি নৌকা হতে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। যার মধ্যে পুলিশ বিভাগ পায় ৫০০ টাকা এবং প্রশাসন (ডিসি ও ইউএনও) পায় ৫০০ টাকা। পুলিশ নির্দিষ্ট সোর্সের মাধ্যমে প্রত্যেক ট্রাক ও নৌকা থেকে এসব চাঁদা বা অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে।

প্রতিবেদনে সাদাপাথর লুটে বর্ডার গার্ড বিজিবিকেও দায়ী করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সাদা পাথর এলাকায় ৩টি বিজিবি পোস্ট রয়েছে। এগুলো হতে লুটের ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৫০০ মিটার থেকেও কম। এত কম দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও কম্পানি কমান্ডার ইকবাল হোসেনসহ বিজিবি সদস্যদের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীরা খুব সহজেই পাথর লুটপাট করতে পেরেছে। বিজিবি সদস্যরা প্রতি নৌকা ৫০০ টাকার বিনিময়ে এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয় এবং পাথর উত্তোলনের সময় বাধা প্রদান করেনি।

প্রশাসন ছাড়া পাথর লুটকাণ্ডে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, সদস্য হাজি কামাল (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু, সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাহার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুসতাকিন আহমদ ফরহাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া ওরফে দুলা, যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন, সাজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কর্মী জাকির হোসেন, সদস্য মোজাফর আলী, মানিক মিয়া, সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরান, কোষাধ্যক্ষ (বহিষ্কৃত) শাহ আলম ওরফে স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স।

তালিকায় রয়েছে আওয়ামী লীগের সাত নেতাকর্মীর নামও। তারা হলেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী বিলাল মিয়া, শাহাবুদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু, কর্মী মনির মিয়া, হাবিল মিয়া ও সাইদুর রহমান।

এতে জামায়াতের দুজনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. ফকরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন। প্রতিবেদনে এনসিপির দুই নেতার নাম এসেছে। এরা হলেন সিলেট জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।

এ ছাড়া অনুসন্ধানে সাদাপাথর লুটের সঙ্গে অন্য আরও ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন কোম্পানীগঞ্জ ভোলাগঞ্জের আনর আলী, উসমান খাঁ, ইকবাল হোসেন আরিফ, দেলোয়ার হোসেন জীবন, আরজান মিয়া, মো. জাকির, আলী আকবর, আলী আব্বাস, মো. জুয়েল, আলমগীর আলম ও মুকাররিম আহমেদ।

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতার প্রতিবাদ : দুদকে প্রতিবেদনে নাম থাকায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কয়েস লোদী, মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন সাহান।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকাল ৩টায় সিলেট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন সাহান ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় তারা বলেন, ‘পাথরকেন্দ্রিক কোনো কিছুর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দুদক যে তদন্ত করেছে সে বিষয়ে আমরা অবগত নই। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলছি—পাথর লুটপাটের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ দেখাতে পারলে আমরা যে শাস্তি দেওয়া হোক মেনে নেব। কিন্তু এভাবে প্রমাণ ছাড়া আমাদের অভিযুক্ত হিসেবে নাম দিয়ে দেওয়া দুঃখজনক। আমরা এর নিন্দা জানাই।’

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জামায়াতে ইসলাম সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াত। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘পাথর লুটপাটের ঘটনায় নেতৃবৃন্দকে জড়ানো জামায়াতে ইসলামী ও নেতৃবৃন্দের চরিত্র হরণের ষড়যন্ত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। অতীতেও জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রও নস্যাৎ হবে।’

পাথর লুটে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে নিয়ে অপপ্রচার চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পাথর লুট দূরে থাক কোনো অন্যায় ও অপকর্মের সঙ্গে জামায়াতের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই।’

এর আগে বুধবার বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ আহমদ চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ‘পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত মর্মে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আমার এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নাম লুটেরাদের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

ওই ঘটনায় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন নয় বরং বাস্তবতাবিবর্জিত কাল্পনিক সংবাদে আশ্চর্য হয়েছেন জানিয়ে কয়েস লোদী বলেন, ‘এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশনের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।’

খুলনা গেজেট/এসএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন