একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলো মেয়ে। অভাব-অনটনের সংসারে মেয়ের ভর্তির টাকা দিতে পারেনি বাবা। তাই অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মেয়ে অনামিকা। বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার লাইন বিলপাবলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দরিদ্র পিতার কাছে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বেশ কয়েকদিন টাকা চেয়ে আসছে অনামিকা। রায়েরমহল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে সে। তার অন্যান্য সহপাঠীরা রায়ের মহল মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। সময় চলে যাচ্ছে তাই বাবার কাছে টাকা চাচ্ছিলো মেয়ে। কিন্তু মেধাবী মেয়ের কথা রাখতে পারেনি অভাবি পিতা আনন্দ বিশ্বাস। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর যা উপার্জন হয়, তাতে কোনমতে সংসারটা চলে তাদের। মেয়েকে বলেছিলো, টাকা দিতে কয়েকটা দিন দেরি হবে। কিন্তু অভিমানি কন্যা বাড়ির সদস্যদের অগোচরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
স্থানীয় গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান (সাবেক) শেখ তুহিনুল ইসলাম জানান, ‘অনেক গরীব মেধাবী শিক্ষার্থী আছে, যাদের অর্থের অভাবে ঝরে যাচ্ছে লেখাপড়া। এরকম আত্মঘাতি ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এজন্য আমি উপজেলার এক মাসিক মিটিংয়ে বলেছিলাম হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু বাজেট রাখতে। লাইনবিলপাবলার আনন্দ অত্যন্ত গরীব মানুষ। একদিকে দিনমজুর পিতার ঘাড়ে প্রতিবন্ধী শিশু বাচ্চাসহ ৫ সদস্যের পরিবারের বোঝা। অন্যদিকে মেয়ের ভর্তির টাকা যোগান পিতার পক্ষে দুরূহ ব্যাপার।
তিনি বলেন, সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলো এখনো দিনমজুর পিতা ঘরে ফেরেনি। এদিকে কন্যার নিথর দেহ পড়ে আছে উঠানে।’ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আড়ংঘাটা থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করছিলো।
খুলনা গেজেট/এসএস