Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ২১শে আগস্ট, ২০২৫ । ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

রূপসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

রেজাউল ইসলাম, রূপসা

খুলনার রূপসা উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৮ জন চিকিৎসকের জায়গায় বর্তমানে ১৬ জন চিকিৎসক কাজ করছেন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বাকি ১২টি পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (শিশু) ডা: শেখ মশিউর রহমান তিনি বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে প্রেষণে রয়েছেন। এছাড়া জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (ফিজিক্যালমেডিসিন রিঃ), জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (চর্ম ও যৌন), জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (অর্থোপেডিক্স), জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (ইউএনটি), জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (সার্জারী), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি), সহকারী সার্জন/ইকুইভিলেন্ট পদে ৫ জনের জায়গায় রয়েছে ৩ জন, পদ খালি রয়েছে ২টি। এছাড়া জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (শিশু) ডা: তাসনুভা ইসলাম ও জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট (এ্যানেস্থেসিয়ালজি) ডা: এ এফ এম আশিকুর হক সপ্তাহে ২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেন। বাকি ৪ দিন খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে কর্মরত থাকেন।

এছাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাত্র ২ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। পদ খালি রয়েছে ৩টি। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদও খালি রয়েছে। হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন বন্ধ থাকায় রোগীদের খুলনাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলায় গিয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে রিপোর্ট করাতে হয়।

রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা অমিত শেখ বলেন, ‘পায়ে প্রচুর আঘাত লেগেছে। হাসপাতালে এসেছিলাম এক্সরে করতে। এসে শুনি দীর্ঘদিন ধরে নাকি এক্সরে মেশিন অকেজো। এখন শহরে যেতে হচ্ছে এক্সরে করাতে।’

ঘাটভোগ এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী তাবাসসুম খাতুন বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালটিতে রোগীদের চাপ বেশি। ডাক্তারও কম থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানায়। দ্রুত যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।’

রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাজেদুল ইসলাম কাউছার বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পূর্ব থেকে জনবল সংকট রয়েছে। চিকিৎসক সংকট থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর স্টাফ। বর্তমানে ২২ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীর চাকরি না থাকার বিষয়টা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে চিঠি এসেছে। ফলে এই ২২ জন কর্মচারীদের মধ্যে পরিছন্নতা কর্মী, রোগীদের খাবার রান্না করা বাবুর্চি এরা রয়েছে। এরা বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে হাসপাতাল আসলে চতুর্থ শ্রেণির স্টাফ ছাড়া কিভাবে চলবে। এটার সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে আমরা সঠিক ব্যবস্থা এখনও নিতে পারিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া হাসপাতালে যে এক্সরে মেশিন এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন আছে। এই দুইটা দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় আছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওনারা যদি এই দুইটা মেশিন নতুন করে সরবরাহ বা মেরামত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তাহলে রোগীরা এ ক্ষেত্রে অনেক বেশি উপকৃত হবে। এছাড়া এখন যেহেতু আগস্ট মাস নরমাল ওষুধ আসতে আরও দুই মাস সময় লাগবে। এ সময়েও রোগীদের একটু সেবার বিঘ্ন ঘটছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হল চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কর্মচারী চাকরি চলে যাওয়া। ফলে হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অতি দ্রুত চতুর্থ শ্রেণীর স্টাফদের সংকোচের বিষয়টি শুরাহা করার জন্য।’

হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে অপারেশন থিয়েটার আছে। অজ্ঞানের ডাক্তার (এ্যানেস্থেসিয়ালজি) যিনি আছেন। তার পোস্টিং এখানে দুইদিন। বাকি চারদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে। গাইনি ডাক্তার থাকায় ওই দুইদিন সিজারের অপারেশন হয়। এছাড়া অন্যান্য যে জেনারেল অপারেশন সেটা ওই বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকার কারণে আপাতত অপারেশন হচ্ছে না।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন