পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একাধিক সন্দেহভাজন জঙ্গি হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাধারণ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্মকর্তারা। খবর আনাদুলুর।
বুধবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি জানান, খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় আধাসামরিক ফ্রন্টিয়ার কর্পসের সদস্যদের বহনকারী একটি যানবাহনকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ঘটনাস্থলেই তিন সেনা সদস্য ও তাদের চালক নিহত হন।
পৃথক একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে প্রদেশটির রাজধানী পেশোয়ারে। মঙ্গলবার গভীর রাতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা একটি গাড়িতে হামলা চালায়। এতে নিহত হন পুলিশ পরিদর্শক আলি হুসেইনসহ আরও দুই ব্যক্তি।
এছাড়া, খাইবার পাখতুনখোয়ার লাক্কি মারওয়াত জেলায় ছুটিতে থাকা ফ্রন্টিয়ার কর্পসের সদস্য আতাউল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত হামলাকারীরা।
গত কয়েক মাস ধরেই আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান, খাইবার, বাজাউর এবং আশপাশের উপজাতীয় জেলাগুলোতে সহিংসতা বেড়েছে। আফগানিস্তান সীমান্তঘেঁষা এসব এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্যমতে, কেবল জুলাই মাসেই পাকিস্তানজুড়ে ৮২টি জঙ্গি হামলা এবং একাধিক নিরাপত্তা অভিযান হয়েছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে অন্তত ২১৫ জন, যার মধ্যে ৩৭ জন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য, ১২৪ জন জঙ্গি এবং ৫৪ জন সাধারণ মানুষ। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৯৯ জন, যাদের মধ্যে ১০৭ জন বেসামরিক নাগরিক, ৫৬ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং ৩৫ জন জঙ্গি রয়েছে।
পাকিস্তান বারবার অভিযোগ করে আসছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্যরা আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে আবার সীমান্ত পেরিয়ে আফগান ভূখণ্ডে আশ্রয় নিচ্ছে। তবে কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা কোনোভাবেই তাদের ভূমি সীমান্তপারের জঙ্গি তৎপরতায় ব্যবহার করতে দেবে না।
খুলনা গেজেট/এএজে