Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
শুক্রবার । ৮ই আগস্ট, ২০২৫ । ২৪শে শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content
জুলাই যোদ্ধা শাফিল

‘হাসিনা চলে গেছে’ শুনে মনে হয়েছিল আমার অন্ধত্ব কামিয়াব

মোহাম্মদ মিলন

‘হাসিনা চলে গেছে’ শুনে ওই মুহূর্তে মনে হয়েছিল আমার অন্ধত্ব কামিয়াব হয়েছে। আমি যেটা হারিয়েছি সেটা দিয়ে আমি না হলেও অন্যরা অন্তত সারা দেশটাকে দেখতে পারবে। কিন্তু হাসিনা যদি কোন মতে টিকে যায় তো, তাহলে আরো হাজার, লাখ লাশ ফেলে দিতো। কিন্তু সেই বাংলাদেশ মুক্তিটা দেখতে পারত না, যেই মুক্তিটা দেখার জন্য আমার চোখ গেছে। এভাবেই খুলনা গেজেটকে বলছিলেন খুলনায় আন্দোলনে চোখ হারানো জুলাইযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল শাফিল।

শাফিল বলেন, ২ আগস্ট সংঘর্ষের ঘটনায় আমার চোখ হারায়। ঢাকায় চিকিৎসার জন্য গেলেও হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হতে পারিনি। শাহবাগে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছি। ৫ আগস্ট দুই চোখেই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আত্মীয়-স্বজনকে বলতাম টিভির ভলিউম বাড়িয়ে দিতে। খোঁজ রাখতাম আমার আর কতোজন ভাই শহীদ হয়েছে, হাসিনার পতন ঘটেছে কিনা। এসব নানা বিষয়ে সংবাদ শোনার জন্য বসে থাকতাম। যখন শুনলাম ‘হাসিনা চলে গেছে’ তখন আমার গায়ের রক্ত কিছুক্ষণের জন্য ছেড়ে দিয়েছিল। তখন ভাবছিলাম যে এটি জাতির জন্য বিশাল বড় কোন ষড়যন্ত্র অথবা এটি জাতির জন্য বিশাল বড় মুক্তির সংবাদ। তখন আমার চোখে যে ব্যথা সেটি কোন স্মৃতিতেই ছিল না। চোখে আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না কিন্তু ওই মুহূর্তে আমার সেই সেন্স কাজ করছিল না।

সাফিল জানান, গত ২ আগস্ট খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে তীব্র আলোর ঝলখানি অনুভব করেন। মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার হয়ে যায় শাফিলের চারপাশ। সহযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর খুলনা, ঢাকার একাধিক হাসপাতাল ও চক্ষু ইনস্টিটিউটেও চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু বাম চোখে আর আলো ফিরে আসেনি। এখন ডান চোখেও ভালোভাবে দেখতে পারছেন না।

দেশের দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় শাফিলদের বাড়ি। বাবা ইউনুস আলী খোকন মৎস্য ব্যবসায়ী। মা মাসুমা আক্তার গৃহিণী। তাদের একমাত্র সন্তান শাফিল। উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন খুলনার বেসরকারি নর্দান ইউনিভার্সিটি বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। পড়াশোনার জন্য বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার নবপল্লী এলাকায়। একমাত্র ছেলের সঙ্গে মা-বাবাও এখন খুলনায় থাকেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন