খুলনার পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আ্যডহক কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয় পরিদর্শক, শিক্ষাবোর্ড যশোর বরাবর লিখিত অভিযোগ হয়েছে। বিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষক কর্মচারী এ অভিযোগ করেন। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ করা হয়, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বোর্ড কর্তৃপক্ষ স্থানীয় ড. মোঃ মোকাররম হোসেনকে সভাপতি মনোনীত করেন। যদিও বিদ্যালয় থেকে প্রেরিত ৩ জনের মধ্যে তার নাম ছিল না। দায়িত্ব পেয়ে সভাপতি কোন এজেন্ডা ছাড়াই গত ২৫ মে বিদ্যালয়ে এসে মিটিং করেন। তাতে কোন সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে গত ২৩ জুন আবার একইভাবে সভা করার সিদ্ধান্ত নিলে কোন সদস্য উপস্থিত না থাকায় সভা হয়নি।
এ কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি একক ক্ষমতা বলে, স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান, সহকারী শিক্ষক প্রকাশ ঘোষ ও অফিস সহকারী সুভাষ মন্ডলকে সাময়িক বহিষ্কার করে। এছাড়া শিক্ষক সুরঞ্জনা রায়, অনিশ রঞ্জন চক্রবর্তী ও সবুজ সরদারকে শোকজ করেন। আর নীতিমালা অনুযায়ী জেষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন করে ১৩ নং ক্রমিকে থাকা সহকারী শিক্ষিকা নাজমুন নাহারকে প্রতিষ্ঠানের চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন।
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নিয়ে বিদ্যালয়ের নামে ব্যাংকে একাউন্ট খোলেন। জানতে পেরে অভিযোগ দিয়ে অন্যান্য শিক্ষকরা তা বন্ধ করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ আন্দোলন করছে। যার মধ্যে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন, মানববন্ধনসহ ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত রয়েছে।
বহিষ্কার হওয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান সভাপতির বন্ধু যশোর বোর্ডের আইএস কামরুজ্জামান। তিনি তাকে সভাপতি বানিয়েছেন। তার ক্ষমতা বলে তিনি যা ইচ্ছে তাই করছেন।
সভাপতি ড. মোকাররম হোসেন বলেন, আমি যেটা করেছি আইনগতভাবে করেছি। আমার বিরুদ্ধে বোর্ডে অভিযোগ করেছে, বোর্ড কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটা মেনে নেবো। বিদ্যালয়ের কেউ আমার কথা শুনছে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহজাহান আলী বলেন, বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। আশা করি দ্রুত সমাস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, সভাপতি সাহেব কিভাবে কি করছেন বিষয়টি তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারবেন। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধান করে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, প্রায় দুই মাস ছাত্র-শিক্ষকরা ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন কারণে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। বর্তমান সভাপতি তার পক্ষ নেওয়ায় বিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম