জুলাই সনদের খসড়াকে অসম্পূর্ণ বলে মনে করে জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকারকে দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রস্তাব বিপজ্জনক বলেও মনে করে দলটি।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সনদ অসম্পূর্ণ এবং কিছু অংশ বিপজ্জনক। তবে কমিশন বলছে, খসড়া একটি নমুনা মাত্র। তবে যদি সেটাই গ্রহণ করা হয়, তাহলে প্রস্তাবিত সনদ গ্রহণ করা যাবে না।
মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের ২১ দিনের সংলাপের বিরতিতে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, জামায়াত সনদের খসড়া করে কমিশনকে দেবে। সংলাপে যেসব বিষয়ে একমত হচ্ছি, সেগুলো বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। সনদ বাস্তবায়নের দুটি পথ থাকতে হবে, ১. অধ্যাদেশের মাধ্যমে একটি আইনি কাঠামো গঠন করে পরে নির্বাচিত সংসদে অনুমোদন। ২. গণভোটের মাধ্যমে জনগণের চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া।
সৈয়দ তাহের বলেন, যেকোনো একটি পদ্ধতিতে সনদের বৈধতা দিতে চাই। অন্যথায় দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ‘অনিশ্চয়তার দিকে’ চলে যেতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়ে সৈয়দ তাহের বলেন, প্রায় সবাই একমত, একমাত্র বিএনপি কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দলের) এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি ওই কমিটিতে থাকবে। তারা ১২ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্য থেকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করবেন। যদি একমত না হয়, তাহলে প্রথমে সর্বসম্মতভাবে, পরবর্তী সময়ে ভোট, তারপর প্রয়োজনে র্যাংক চয়েস ভোটিং পদ্ধতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। এই পদ্ধতিতে ভোটার হবেন মোট সাতজন। উপরে উল্লিখিত পাঁচ সদস্য এবং সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের একজন করে বিচারপতি থাকবেন।
তাহের বলেন, বিচারপতি দুজন যুক্ত করা হয়েছে যেন এককভাবে তৃতীয় দল বা অন্য কেউ ডিসাইডিং ফ্যাক্টর না হয়ে যায়। আমরা আশা করি বিচারপতিরা নিরপেক্ষ থাকবেন এবং হর্স ট্রেডিংয়ের আশঙ্কা কমবে।
তাহের জানান, বিএনপি চায় ঐকমত্য না হলে বিষয়টি সংসদে পাঠানো হোক। তবে জামায়াতসহ অধিকাংশ দল মনে করে, সংসদে পাঠালে তা আর সিদ্ধান্ত হবে না। সংসদে পাঁচ-ছয়টা দল আছে, অথচ সংলাপে ৩০টির বেশি দলের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
খুলনা গেজেট/এসএস