খুলনা, বাংলাদেশ | ২১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬
  সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা মারা গেছেন
  গাজায় আরও ১৩৮ জনকে হত্যা করলো ইসরায়েল

করাচিতে ভবন ধসে নিহত ১৪, আটকা পড়েছেন অনেকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করাচির লিয়ারি এলাকার বাগদাদি মহল্লায় পাঁচতলা একটি আবাসিক ভবন ধসে কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেসকিউ ১১২২ সূত্র জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচজন নারী, আটজন পুরুষ এবং সাত বছরের একটি শিশু। ৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ।

স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা, ধ্বংসস্তূপের নিচে ২৫ থেকে ৩০ জনের মতো মানুষ আটকা পড়ে থাকতে পারেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। করাচির মেয়র মুর্তজা ওয়াহাব জিও নিউজকে নিশ্চিত করেছেন যে, ধসে পড়া ভবনটি ১৯৭৪ সালে নির্মিত এবং অনেক আগে থেকেই এটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে চিহ্নিত ছিল। তিনি বলেন, করাচিতে এমন ৪ শতাধিক ভবন রয়েছে, যেগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের হাতে দুইটি পথ রয়েছে— মানুষকে বোঝানো অথবা জোর করে তাদের সরিয়ে দেওয়া। তবে প্রত্যেক সরকার সাধারণত বোঝানোর পথই বেছে নেয়। দুঃখজনক এ ঘটনা প্রমাণ করে, সরকার যখন কিছু বলে, সেটি গুরুত্ব দিয়ে শোনা উচিত।

লিয়ারির মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভবনগুলো একে অপরের খুব কাছাকাছি নির্মিত। তাই পাঁচতলা ভবনটি ধসে পড়ার পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পাশের দুটি ভবন— একটি দুইতলা এবং অপরটি সাততলা— থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও রেঞ্জাররা মানুষকে ওই এলাকা থেকে দূরে থাকার জন্য মাইকিং করে অনুরোধ জানাচ্ছে। উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য ট্র্যাপড পারসন লোকেটর নামের একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ধ্বংসস্তূপের নিচে হৃদস্পন্দন শনাক্ত করতে পারে। প্রতিটি স্তরের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলার পর এই যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে উদ্ধার তৎপরতা ধীর হলেও নির্ভুল ও সুরক্ষিতভাবে এগোচ্ছে। এছাড়া উদ্ধার অভিযানে ভারী যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করা হচ্ছে এবং রাতেও কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ফ্লাডলাইট স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।

দক্ষিণ জেলার ডেপুটি কমিশনার নিশ্চিত করেছেন যে ধসে পড়ার সময় ভবনটিতে ছয়টি পরিবার বসবাস করছিল। ঘটনায় আহত এক ব্যক্তি জানান, তার খালার পরিবার ভবনের চতুর্থ তলায় থাকতেন। তিনি বলেন, আমরা জানি না ভেতরে এখনো কতজন আটকা আছেন। কিছু মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, কেউ কেউ মারা গেছেন। আমার খালা গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দারাই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন, কারণ রাস্তা বন্ধ এবং মোবাইল সিগনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পেশাদার দলগুলোর পৌঁছাতে বিলম্ব ঘটে। সিন্ধু প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, করাচির অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাঈদ গণি বলেন, যেসব ভবন বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত হয়েছে, তাদের বাসিন্দাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তারা সরতে চান না। তিনি আরও জানান, লিয়ারির ভবন ধসের ঘটনায় তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। সিন্ধু বিল্ডিং কন্ট্রোল অথরিটি জানায়, ভবনটি ৩০ বছরের পুরনো এবং অনেক আগেই ‘অসুরক্ষিত’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। তাদের দাবি, বাসিন্দাদের একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। ঘটনার পর এসবিসিএর পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং ভবন পরিদর্শকদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!