আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান চলছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (গণসংযোগ) তানজির আহমেদ।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- এনবিআরের করদাতা ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য লুতফুল আজীম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপকর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম ও যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাছান।
এর আগে গত রোববার একই অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আরও ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালায় দুদক।
তানজির আহমেদ জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তাগণ কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে কর দাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এক্ষেত্রে, প্রতি বছর সরকার বিপুল রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেন মর্মে জানা যায়।
তানজির আহমেদ আরও বলেন, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরো অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।
অনুরূপভাবে, বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্টেশনে চাকরিকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তারা।
খুলনা গেজেট/এএজে