‘মব সন্ত্রাস’ সবসময়ে নিন্দনীয় । গতকাল যা ঘটেছে বা সাম্প্রতিক সময়ে আইন হাতে তুলে নেওয়ার যেসব ঘটনা ঘটেছে তা কোন বিবেকবান মানুষ সমর্থন করতে পারেনা। আমিও করি না। কিন্তু এখন যারা ক্ষোভে নিন্দায় ফেটে পড়ছেন, তারা কী আগেও এমন নিন্দা করেছিলেন? তাদের মধ্যে কয়েকজনের ফেসবুক ওয়াল ঘেঁটে দেখলাম, তখন নিশ্চুপ থেকেছেন। মজা পেয়েছেন! বিকৃত উল্লাসও করেছেন অনেকে। যৌক্তিকতা খুঁজে পেয়েছেন।
২০১৮ সালের ২২ জুলাই কুষ্টিয়ার আদালতে ভুয়া মামলায় জামিন চাইতে গিয়ে খোদ আদালত চত্ত্বরে যখন সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ আমরা আক্রান্ত হলাম, অবরুদ্ধ হলাম- তখন ৫-৬ ঘন্টা ধরে চেষ্টা করেও কাউকে পাশে পাইনি। তাঁকে হত্যা চেষ্টা হলো। পৈশাচিক উল্লাস হলো, উদ্ধার করে আনার জন্যে অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করলে সেটিও আটকে রাখা হলো।
মাহমুদুর রহমানতো সিইসি নুরুল হুদার মতো পাপী ছিলেন না। ফ্যাসিবাদকে শক্তপোক্ত করতে, গুম-খুনের শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে, গণতন্ত্রকে কবরস্থ করতে কোন ভূমিকা রাখেননি। দেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে ছিলেন। তাঁর রক্তাক্ত চেহারা যাদের অন্তরে এতটুকু রেখাপাত করেনি, তারা অন্ততঃ এখন আহা-উহু করবেন না প্লিজ।
শুধু মাহমুদুর রহমান নয়, দৈনিক সংগ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ সম্পাদক আবুল আসাদকে অফিসে ঢুকে কি করেছিল ভুলে গেছেন? বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদোম দেহের কথা মনে আছে? হাসান মাহমুদের সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রামে তাঁকে কিভাবে আক্রমন করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছিল। বেগম খালেদা জিয়ার ওপর বাংলামোটর ও ফেনীতে যে হামলা হয়েছে, তখন আপনাদের ভূমিকাটা আয়নায় দেখুন না।
আপনারা তখন যেহেতু চুপ ছিলেন, বিবেক গণভবনে বন্ধক রেখেছিলেন, এখনও বরং চুপ মেরে থাকুন। আমরা নিন্দা করেছি, করছি, করবো। ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কেবল আমাদেরই আছে, যারা দেড় দশক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে লড়েছি। ফ্যাসিবাদের দোসরদের মুখে এখন ‘ওঁম শান্তি’র বাণী বড়ই বেমানান। (ফেসবুক ওয়াল থেকে)
লেখক : এমডি, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও সাবেক সভাপতি, বিএফইউজে।
খুলনা গেজেট/এনএম