বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১৮২নং বারইখালী সুতালড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজের মেয়াদ শেষ হলেও। পুনরায় কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। কাজের ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পরে দীর্ঘ ৯ মাস নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, পরবর্তীতে গত ২৪ সালের নভেম্বর মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে কাজটি শুরু করেন কিছুদিন কাজ হলেও ধীরগতিগে স্কুলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
এতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে টিন শেটের জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে ক্লাশ করছেন। বর্ষা মৌসুমের পূর্বে নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হলে ভোগান্তি বাড়বে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, চাহিদা ভিত্তিক নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প ১ম পর্যায়ের আওতায় ২০২৩- ২০২৪ অর্থবছরে এ বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছেন খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স চান এন্টারপ্রাইজ।
বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর কথা ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের প্রথম দিকে, শেষ করার কথা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে। কিন্তু কাজের অনুমতির পরও ঠিকাদার দীর্ঘ ৮ মাস কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিলো। গত বছরের শেষের দিকে যেনতেন ভাবে কাজ শুরু করে। কাজ শুরুর এক বছরের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো কাজ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ভবনটি নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন কাজ না করেই সময় বাড়ানোর আবারোও আবেদন করলে সরকার নির্মাণের সময় বৃদ্ধি করে কবে নাগাদ নির্মাণ কাজ শেষ করবে ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে।
বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকে। কবে শেষ হবে?। আমরা টিনশেড ঘরে অনেক কষ্টে পড়াশুনা করে আসছি। একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের হাটু সমান পানির মধ্যে ক্লাস করতে হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুলে এভাবে ফেলে রাখার কারণে আমাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে এসে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। একই সাথে অনেকগুলো স্কুল ভবনের কাজ শুরু হলেও সেগুলো সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। এই স্কুলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারনে এখন ভবন নির্মাণ কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি। ঠিকাদার তাদের ইচ্ছামতন কাজ করে যখন মনে চায় তখন এসে কাজ করে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ বলেন, বিগত এক বছর পূর্বে ভবন নির্মাণ শুরু হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারনে এখনও ভবন নির্মাণ না হওয়ায় আমরা ঝুঁকি নিয়ে টিনের চালের জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠদান করাচ্ছি। অফিসও করছি।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, একটি ব্রীজের কারনে প্রায় এক বছর পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। জুন মাস পর্যন্ত সময় আছে এর মধ্যে ভিতরে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চান এন্টারপ্রাইজকে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস