বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, গত ১৬ বছরে দেশের মানুষ তাদের সব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। বিগত দিনে ফ্যাসিবাদী সরকার অনেক টাকা বিদেশে পাচার করেছে এবং মানুষের ওপর অনেক অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। কারণ তারা আখেরাতকে ভয় করত না। এখন আমাদের এমন লোককে নির্বাচন করতে হবে যারা আল্লাহ ভীরু আখেরাতকে ভয় করে আগামী দিনে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামের পক্ষে জমিনে ন্যায় এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই দাঁড়ি-পাল্লা মার্কায় ভোট দিব ইনশাল্লাহ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে খুলনা মহানগরী খালিশপুর থানাধীন ৮ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ক্রিসেন্ট জুট মিলস ও খালিশপুর জুট মিলস এলাকায় গণসংযোগ শেষে ক্রিসেন্ট জুট মিলস লিমিটেডের সামনে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা মানুষের জন্য কল্যাণকর নয় বরং তা আমাদেরকে অপশাসন, দুঃশাসন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য উপহার দিয়েছে। একথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, মানুষের তৈরি জীবনদর্শন মানবজীবনের কোন সমস্যার সমাধান করা যায় না। বস্তুত, আল্লাহর দেয়া বিধানই শাস্বত ও সর্বজনীন জীবনবিধান। মানবজীবনে এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান ইসলামে দেওয়া হয়নি। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদের সকলকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মূলত মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য তাকওয়া ভিত্তিক ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। মূলত, জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে আর্তমানবতার সার্বিক কল্যাণ। তিনি দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
৮ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আসাদুজ্জামান এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু সাইদুর রহমান এর পরিচালনায় পথসভা ও গণসংযোগ কর্মসূচীতে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, সহ-সভাপতি এসএম মাহফুজুর রহমান, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রাকিব হাসান, খালিশপুর থানা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি আব্দুল জলিল হিমেল।
অন্যান্যের মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খালিশপুর থানার সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, শ্র্রমিক নেতা বদরুর রশিদ মিন্টু, মুহিব্বুর রসুল, তাজ মুহাম্মদ, ইমদাদ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, বেবি জামান, আব্দুল বারী, মিজানুর রহমান, মোখলেসুর রহমান, বাবুল শেখ, ছাত্রশিবির নেতা মুজাহিদুল ইসলাম, গোলাম রসুল, খোরশেদ আলম, ইঞ্জি. মহিউদ্দিন, জামায়াত নেতা আব্দুর রহিম তপু, সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু, নাসিম মোল্লা, আব্দুর রাজ্জাক, তানভির আহম্মেদ, মেহেদী হাসান, আব্দুল আওয়াল, মাওলানা নুরুল আমীন, হাফেজ মাওলানা হাফিজুর রহমান প্রমুখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানাধীন ৬ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে পাবলা এলাকায় গণসংযোগ করেন অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। এ সময় খালিশপুর ও দ্যেলতপুর এলাকার ব্যবসায়ী, পথচারী, রিকশা-ভ্যান চালক ও জনসাধারণের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতি উপকরণ বিতরণ করেন। সমাজ থেকে যাবতীয় অপকর্ম দূর করতে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি ইসলামের পক্ষে সমর্থন চেয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে খুলনা মহানগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াত দেশকে ইসলামী কল্যাণে পরিণত করতে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা কুরআন-সুন্নাহর আদর্শের ভিত্তিতে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশে পরিণত করতে দেশ ও জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। একই সাথে আমরা রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে দেশকে বৈষম্যমুক্ত করতে চাই। জুলাই বিপ্লবের স্লোগানও ছিল ‘আমরা ন্যায়বিচার’ চাই। আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায় ২ হাজার ছাত্র-জনতা রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে দেশকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদ মুক্তি করছে। তাই জুলাই বিপ্লবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদেরকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
খুলনা গেজেট/এএজে
