ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে নাকের পলিপ অপারেশনের পর শ্রী উৎস ভট্টাচার্য্য নামে এক মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে উপজেলার কালীগঞ্জ শহরের ইকো ডায়াগনস্টিক ও ফাতেমা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
উৎস ভট্টাচার্য্য উপজেলার রায়গ্রাম এলাকার উজ্জল ভট্টাচার্য্যের ছেলে। তিনি সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
শাহ-আলম জানায়, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় ফাতেমা প্রাইভেট হাসপাতালে নাকের পলিপ অপারেশন করতে যায় শহরের রায়গ্রামের মেধাবী ছাত্র শ্রী উৎস ভট্টাচার্য্য। হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী রাজিবুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে অপারেশন করার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সকাল ৯টার দিকে মারা যায় কলেজ ছাত্র উৎস। মারা যাওয়ার পরও উৎসকে যশোরে রেফার্ড করা হয় বলে অভিযোগ করে পরিবারের স্বজনরা।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালে আসে নিহত উৎস ভট্টাচার্য্যের সহপাঠীরা। এ সময় তারা প্রাইভেট হাসপাতালটি বন্ধের দাবি জানান। তারা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীদের বের করে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সহপাঠীদের দাবির মুখে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নিহতের বড় ভাই উন্মেষ ভট্টাচার্য্য জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ছোট ভাইকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নাকের পলিপ অপারেশন করানোর পর মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছিল তার ছোট ভাই। মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ায় দুই ঠোঁট লেগে যাওয়ায় পানি লাগিয়ে দিচ্ছিলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম স্যালাইন চলছে কিন্তু তার নিঃশ্বাস আর পড়ছে না। তখন হাসপাতালে দায়িত্বরতদের ডাক দিলে তারা কয়েকজন আসে। তখন আমি আর আমার মা তাদের পায়ে ধরে বলেছি যে আমার ভাইয়ের প্রাণ ভিক্ষাটা দেন। তারা তখন বলে কিচ্ছু হয়নি আপনার ভাইয়ের। অবশ হয়ে আছে। কিচ্ছু হবে না, জ্ঞান ফিরলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তারা ভিডিওকলের মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছিল। তখন কোনো চিকিৎসক ছিল না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার ভাইয়ের অবস্থা খারাপ দেখে বারবার বলা হয় যে পরামর্শ দেন কোথায় নিয়ে যাব। কিন্তু তারা কিছুই হয়নি বলে বারবার আমাদের সময় নষ্ট করে। পরে একজন চিকিৎসক এসে বলে যশোরে নিয়ে যান। ততক্ষণে আমার ভাই মারা গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজাউল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। অফিস খুললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নিহতের স্বজনদের দাবির প্রেক্ষিতে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী বের করে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার পর বন্ধ করা হয়েছে।
খুুলনা গেজেট/এএজে